বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

‘খাসোগি হত্যায় যুবরাজের সম্পৃক্ততা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই’

আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৪২ এএম

সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের দায় থেকে সহজেই মুক্তি মিলছে না সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সিনেট সদস্যরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, খাসোগি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সৌদি যুবরাজের জড়িত থাকা নিয়ে তারা নিশ্চিত। এ ঘটনায় তার সম্পৃক্ত না থাকার ‘সম্ভাবনা শূন্য’।

আলজাজিরা জানায়, বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র পরিচালক জিনা হাসপেলের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার গোপন বৈঠক শেষে সিনেটররা এ বিবৃতি দেন।

ডেমোক্রেট সিনেটর বব মেনেন্দেজ বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি যা ভেবে আসছিলাম সেটি আরো জোরালো হয়েছে।’ সিনেটের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির গুরুত্বপূর্ণ এ সদস্য খাসোগি হত্যাকাণ্ডে জোরালো পদক্ষেপ এবং ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি জোটকে সমর্থন তুলে নেয়ার আহ্বান করেছিলেন সিনেটে।

রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম সাংবাদিকদের বলেন, “ইচ্ছাকৃতভাবে অন্ধ সাজলেই কেবল এই সিদ্ধান্তে আসা যাবে যে, মোহাম্মদ বিন সালমানের সাজানো এবং তার অধীনের লোকেরাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়নি।”

তিনি আরো বলেন, “এটা সহজেই বুঝা যাচ্ছে যে, ট্রাম্প প্রশাসন যুবরাজের কুকর্মের সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো স্বীকার করতে চায় না।”

এই দুজনের মতোই একই কথা বলেছেন সিনেটের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান এবং রিপাবলিকান সিনেটর বব কর্কার। তিনি বলেন, কোনো ধরনের সন্দেহ নাই যে, যুবরাজ মোহাম্মদের নির্দেশে এবং তত্ত্বাবধানে খাসোগি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

তিনি বলেন, “যুবরাজকে বিচারকের মুখোমুখি করা হলে তাকে দোষী সাব্যস্ত করতে ৩০ মিনিটও লাগবে না।”

গুরুত্বপূর্ণ রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট সিনেটররা ছাড়াও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিনেটের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটি, ব্যাংক ও মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কমিটি এবং সিনেট আর্মড সার্ভিসের সদস্যরা।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন জামাল খাসোগি। গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন ওয়াশিংটন পোস্টের এই কলামিস্ট।

শুরুতে অভিযোগ অস্বীকার করে সৌদি। তবে সংবাদমাধ্যমে তুর্কি গোয়েন্দাদের একের পর এক ‘তথ্য ফাঁসে’র মুখে ১৯ অক্টোবর খাসোগি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে বলে স্বীকার করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। যদিও এর সাথে সৌদি যুবরাজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে তারা দাবি করে।

পরবর্তীতে নভেম্বরের মাঝামাঝিতে সিআইএ’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশেই  খাসোগিকে হত্যা করা হয়। এই কাজে সহযোগিতা ছিল তার ছোট ভাই যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালিদ বিন সালমানের।

তবে শুরু থেকে সৌদি যুবরাজকে বাঁচানোর চেষ্টা করে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মোহাম্মদ বিন সালমান জড়িত আছেন এমনটা বিশ্বাস করেন না।

গত সপ্তাহে সিনেটে এক রেজুলেশন আনার প্রস্তাবে সিনেটররা সৌদি আরবের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্টতা খতিয়ে দেখার কথাও বলেন। এ ঘটনা এবং এর পরবর্তী অনুসন্ধান ও সমালোচনার ধারাবাহিকতায় সিনেটররা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, ইয়েমেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধ করা উচিত।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত