এককালে তিতা থেকে টক—প্রতিদিনের খাবারের মেনুতে সব থাকত। সে সব দিন আলাদাই ছিল। এখন রান্নার অত সময় নেই, তাই বসে খাওয়ার সময়ও নেই। সবাই দৌড়াচ্ছেন। ভাত খেলেও এক পদ, বড়জোর দু'পদে খাওয়া। ফলে তেমন ভাবে তিতা, টক রোজের খাবারে থাকে না। এমনিতেই বাড়ির ছোটরা তিতা-বিরোধী হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে। ফলে রকমারি রান্না হলেও তিতা কমই হয়ে থাকে।
কিন্তু গ্রীষ্ককালে তিতা খাওয়া প্রয়োজন। প্রতিদিনের খাবারে না হলেও অন্তত সপ্তাহে চার দিন তিতা খাওয়া দরকার বলেই মনে করেন পুষ্টিবিদরা। বাঙালির কাছে তিতা বলতে মূলত উচ্ছে, করলা, নিমপাতা, সজনে ডাঁটা বা ফুল। এ ছাড়া আছে মেথি, কালমেঘ বা থানকুনি, আছে হেলেঞ্চাও। এ সবের নাম শুনলেই অনেকের ঠোঁটে বিরক্তি আসে। মাছ-মাংস, মিষ্টি ছেড়ে কে-ই বা তিতা খেতে চায়! কিন্তু তিতার অনেক গুণ। জানলে মন বদলাবে অনেকেরই।
কী গুণ আছে তিতার?
প্রায় সারা বছর উচ্ছে পাওয়া যায়। তাতে আছে রকমারি ভিটামিন। আছে নানা প্রকারের অ্যান্টি অক্সিডেন্টও। এ ছাড়াও, নিমপাতা এবং উচ্ছেতে আছে প্রদাহনাশক ক্ষমতা, আছে আয়রন।
গ্রীষ্মকালে কেন তিতা খাবেন?
গরমকালে শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। এসময় রোগজীবণু আপনার আশপাশেই ঘুরঘুর করে। তিতা খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। মূলত সে কারণেই তিতা খেতে বলা হয়। রোজ অল্প পরিমাণ নিমপাতা বা উচ্ছে যদি ভাতের সঙ্গে খাওয়া যায়, তা হলে শরীরের প্রতিরোধশক্তি অনেকটাই বাড়ে।
কী ভাবে খাবেন তিতা?
অধিকাংশের হাতেই এখন রান্না করার সময় বেশ কম। অফিস-সংসার সামলে কোনোমতে হয়তো ডাল-ভাত-মাছের ঝোল বানিয়ে নেন। তবে বাঙালির চিরকালের পছন্দের দুটি সহজ রেসিপি কিন্তু খাওয়ানোই যায়। নিম-বেগুন ভাজা আর করলার ঝোল। রান্নার সময়ে হাতে মিনিট দশের অতিরিক্ত রাখলেই এই দুই খাবার বানিয়ে নেওয়া যায়। হাতে সময় যদি একেবারেই না থাকে, তবে উচ্ছে সেদ্ধ দিয়ে দিন ভাতের মধ্যেই। গরম ভাতে সামান্য ঘি দিয়ে একটি উচ্ছে সেদ্ধ মেখে খেলেও উপকার পাবেন। আর ছুটির দিনে বিশেষ আয়োজনের জন্য হাতে সময় থাকলে না হয় বানিয়ে নেবেন সজনে, করলা, বেগুন, পেঁপে দিয়ে সুগন্ধি কোনো ডিশ।