জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত উপসচিব পুলে কোটা পদ্ধতি বহাল, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারকে সিভিল সার্ভিসের বহির্ভূতকরণের প্রতিবাদ এবং কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’ এর আহ্বানে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। মানববন্ধনে কর্মকর্তারা সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে অগ্নিনির্বাপণকালে ফায়ার সার্ভিস কর্মী নিহতের ঘটনায়ও গভীর শোক প্রকাশ করেন তারা। বিগত সময়ের দুর্নীতির নথি গায়েবের জন্য এটা কোনো ষড়যন্ত্র কিনা তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এ সময় বক্তারা আরও বলেন, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে ৫০ শতাংশ প্রশাসন ক্যাডার থেকে এবং বাকি ৫০ শতাংশ অন্যান্য ক্যাডার থেকে নেওয়ার কথা জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রস্তাব করেছে। এই প্রস্তাব তারা প্রত্যাখ্যান করছেন।
তাদের দাবি, নিজ নিজ পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় থেকে পদোন্নতি দিতে হবে, উপসচিব পদে নিয়োগ হবে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন করতে হবে, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডারে আলাদা নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তাব বাতিল করতে হবে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সাড়ে চার মাসেও শৃঙ্খলা ফেরেনি জনপ্রশাসনে। দায়িত্ব নেওয়ার শুরু থেকেই বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে প্রশাসনের মূল কেন্দ্র সচিবালয়ে। বিভিন্ন দাবিতে সচিবালয়ের ভেতরে বাইরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিক্ষোভ-সমাবেশ বা কোনো কর্মকর্তার অফিস ঘেরাওয়ের ঘটনা লেগেই রয়েছে। নাগরিকসেবা সহজ করা, কাজের গতি বাড়ানো এবং দুর্নীতি কমানোর ক্ষেত্রে তেমন নজর না দিয়ে পদোন্নতি, পদায়নসহ নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আন্দোলনে ব্যস্ত থাকতে দেখা যাচ্ছে কর্মকর্তাদের।
এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যেই জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরে প্রশাসনে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত না রেখে আলাদা রাখা এবং উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ ও অন্য ক্যাডারগুলো থেকে ৫০ শতাংশ কর্মকর্তা নিয়োগের প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নেমেছেন সব ক্যাডারের কর্মকর্তারা।