গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন সামরিক এলাকা নেটজারিম করিডোর থেকে সরে এসেছে ইসরায়েলি সেনারা। সেনা প্রত্যাহারের পর গাড়ি ও গরুর গাড়িতে করে তোশক ও অন্যান্য মালামাল বোঝাই শত শত ফিলিস্তিনি গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিরতে শুরু করে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলেছে, গত ১৯ জানুয়ারি হামাস-ইসরায়েলের স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী নেটজারিম করিডোর থেকে ইসরায়েলি সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় এখন পর্যন্ত ২১ ইসরায়েলি ও ৫৬৬ ফিলিস্তিনি মুক্তি পেয়েছেন।
তিন সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ের শেষে ৩৩ জিম্মি এবং ১,৯০০ বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েলের দাবি, ৩৩ জনের মধ্যে আটজন মারা গেছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ২৫১ জন জিম্মিকে আটক করে এবং প্রায় ১,২০০ জনকে হত্যা করে, যার ফলে গাজা যুদ্ধ শুরু হয়।
গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের অভিযানে অন্তত ৪৮ হাজার ১৮৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের হামলায় গাজার দুই-তৃতীয়াংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
যুদ্ধের শুরুতে উত্তর গাজার প্রায় ৭ লাখ বাসিন্দা দক্ষিণাঞ্চল ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন। তখন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ফিলিস্তিনি অঞ্চলে স্থল আক্রমণ শুরু করার আগে গণ সরিয়ে নেওয়ার আদেশ জারি করেছিল।
পরে এসব বাস্তুচ্যূত গাজা-ইসরায়েল সীমান্ত থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত নেটজারিম করিডোর দিয়ে তাদের বাড়িতে ফিরতেও বাধা দেওয়া হয়।
উত্তর ও দক্ষিণ গাজাকে বিভক্তকারী এই করিডোরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সক্রিয় অবস্থানের কারণে ফিলিস্তিনিরা বাড়িঘরে ফিরতে পারছিলেন না। তবে ইসরায়েলি বাহিনী গত মাসে করিডোরের পশ্চিম থেকে আংশিকভাবে সরে গেছে।
যানবাহনে থাকা ব্যক্তিদের সালাহ আল-দিন স্ট্রিট ব্যবহার করতে হবে এবং মার্কিন ও মিশরীয় সুরক্ষা ঠিকাদারদের দ্বারা অস্ত্রের জন্য স্ক্রিনিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
ইসরায়েলে প্রতিরক্ষা বাহিনী করিডোরের পূর্ব অংশ থেকে রোববারের সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেনি। বিবিসি বলেছে, সেখান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে গাজা সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া হয়ে যাবে ইসরায়েলি বাহিনীর।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ বলছে, হামাস পরিচালিত গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জনগণকে ‘সতর্কতা অবলম্বন এবং তাদের নিরাপত্তার জন্য বিদ্যমান চলাচলের নির্দেশিকা’ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।