শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

বন্ধু নির্বাচনে ইসলামের নির্দেশনা

আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:০৬ এএম

আমরা এই পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী যাত্রী। আমাদের জীবনযাত্রায় সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা ও বিপদাপদ ভাগাভাগি করার জন্য প্রয়োজন হয় বন্ধুর। যারা আমাদের ব্যথায় ব্যথিত হবে, সান্ত্বনার সুমিষ্ট বাণী শুনিয়ে ধৈর্যধারণ করার সাহস জোগাবে এবং আমাদের আনন্দে আনন্দিত হবে, সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে প্রেরণা জোগাবে। তাই বন্ধু হিসেবে প্রকৃত দ্বীনদার ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী লোকদের নির্বাচন করা আবশ্যক। ইসলাম হলো ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের ধর্ম। কারও সঙ্গে দ্বীনের স্বার্থে বন্ধুত্ব করা এবং পরস্পর পরস্পরকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসা মহৎ ইবাদত। তবে এমন ব্যক্তিকে বন্ধু নির্বাচন করতে হবে, যার মধ্যে বিশেষ গুণ ও উত্তম চরিত্র রয়েছে। রাসুল (সা.) বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, মানুষ তার বন্ধুর ধর্ম (স্বভাব-চরিত্র) দ্বারা প্রভাবিত হয়। সুতরাং তোমাদের প্রত্যেকে যেন লক্ষ করে সে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে। (আবু দাউদ ৪৮৩৩)

বন্ধুত্বের মাধ্যমে মানুষ সাধারণত দুটি উপকারের প্রত্যাশা করে। এক. পার্থিব উপকার। এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য হয় বন্ধুর সম্পদ ও প্রভাব-প্রতিপত্তি দ্বারা উপকার লাভ করা অথবা শুধু দেখা-সাক্ষাৎ ও কথাবার্তার মাধ্যমে স্বস্তি অনুভব করা। দুই. দ্বীনি উপকার। এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য হয় বন্ধুর ইলেম ও আমলের মাধ্যমে উপকৃত হওয়া। তার প্রভাব-প্রতিপত্তির মাধ্যমে খারাপ মানুষের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া। বিপদাপদ ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বন্ধুকে সহযোগী হিসেবে পাশে পাওয়া ইত্যাদি।

বন্ধুত্বকে আমরা সামান্য একটি বিষয় ভাবলেও তা মোটেও সামান্য কোনো বিষয় নয়। এ বিষয়ে আমরা রাসুল (সা.)-এর এই হাদিসটি থেকে আরও স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারি। রাসুল (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহ কেয়ামতের দিন বলবেন, সেসব লোকেরা কোথায়, যারা আমার মহব্বতের জন্য পরস্পরকে ভালোবেসেছিল? আজ আমি আমার (আরশের) ছায়াতলে তাদের আশ্রয় দেব। আজ আমার (আরশের) ছায়া ছাড়া অন্য কোনো ছায়া নেই। (সহিহ মুসলিম ২৫৬৬)

বন্ধুত্বের আগে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করতে হবে। সাধারণত বিভিন্ন কারণ ও উপলক্ষকে কেন্দ্র করে আমাদের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে থাকে। যেমন প্রতিবেশী হওয়ার কারণে, একই অফিসে চাকরি করার কারণে, একসঙ্গে পড়াশোনা করার কারণে, দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ, ট্রেন কিংবা বিমানে পাশাপাশি বসার কারণে একে অপরের সঙ্গে পরিচিতি এবং পারস্পরিক বন্ধুত্ব তৈরি হয়। বন্ধুত্ব যেভাবেই তৈরি হোক না কেন, সেটার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে, সে ভালো মানুষ কি-না। সে আল্লাহর প্রতি আনুগত্যশীল বান্দা কি-না। কারণ উত্তম ও দ্বীনদার বন্ধু দুনিয়াতে আল্লাহর পর সবচেয়ে উত্তম সহযোগী এবং আখেরাতের সফরে উত্তম সহযাত্রী হয়ে থাকে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত