ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু বলেছেন, গত দেড় যুগে খুনি হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে, বিএনপি ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক কাঠামোকে আরও দৃঢ় করার জন্য ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি প্রস্তাবনা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথা বাতিলের সমালোচনা করে আজ নিউমার্কেট থানা বিএনপির কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রফিকুল আলম মজনু বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা নিজের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার কুট ভাবনাতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছিল। এতে করে রাষ্ট্রের ওপর জনগণের মালিকানা দাবির আর কোনো সুযোগ তারা রাখে নাই। তাই বিএনপি জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠায় ভোটাধিকার আন্দোলনে ডাক দিয়েছিল।
তিনি বলেন, দীর্ঘ দেড় যুগের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানে হাসিনার পতন হয় এবং স্ব-পরিবারে দেশ থেকে পালিয়ে যায়।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম বলেছেন, সংস্কারের অগ্রনায়ক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়া, তার হাতেই একদলীয় বাকশাল থেকে বহুদলীয়, গণতন্ত্রে এবং ৪টি সংবাদ পত্রের পরিবর্তে অসংখ্য গণমাধ্যমের সূচনা হয়।
অসীম বলেন, একইভাবে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার হাত ধরে বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু হয়েছিল। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছেন, তিনি এবং বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া-রূপসা থেকে পাথুরিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত জনপদের সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন।
বিএনপি নেতা শেখ রবিউল আলম রবি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সংবিধান ব্যবহার করেছে দলীয় সংকীর্ণ স্বার্থে। তারা সংবিধান সংশোধনী করে গণতন্ত্র হত্যা করেছে। বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছেন, লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন বলেন, গত দেড় যুগে হাজার হাজার গুম-খুন হয়েছে, ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে যারা, তাদের বিচার করতে হবে।
তিনি দাবি করেন, জনপ্রশাসনে ফ্যাসিবাদের দোসরদের সরিয়ে দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে হবে।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, বিএনপি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য লড়াই করেছে। হাসিনা এই লড়াইকে রক্তাক্ত করেছে। যার ফলে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে এবং হাসিনা পালিয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, মুক্ত পরিবেশে আবারও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। জনগণের ইচ্ছাকে মূল্য দিচ্ছে না কেউ কেউ। ইশরাক বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে কোনো রকম স্থানীয় নির্বাচন প্রত্যাশিত নয়।
নগর সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন বলেছেন, অভ্যুত্থানে পক্ষের শক্তির ঐক্য আজ বড় প্রয়োজন, নিজেদের দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের প্রয়োজনের কথা ভাবতে হবে।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু, সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন। কর্মশালায় ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি উপস্থাপন ও বিশ্লেষণ করেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার অসীম, কেন্দ্রীয় নেতা শেখ রবিউল আলম রবি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হারুনউর রশীদ হারুন, লিটন মাহমুদ, আব্দুস সাত্তার, হাজী মনির হোসেন চেয়ারম্যান, অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন সরদার, মজিবুর রহমান মজুসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
