শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

সিকৃবি

উদ্বোধনের দুই মাসেই ৩৪ কোটি টাকার অডিটোরিয়ামে ফাটল

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:২১ পিএম

উদ্বোধনের ২ মাসের মধ্যেই প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নান্দনিক অডিটোরিয়ামের ছাদ ও কলামের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি দেয়াল ও ছাদ হয়ে গিয়েছে স্যাঁতসেঁতে। দুই মাস যেতে না যেতেই ছাদ থেকে পানি পড়ে শ্যাওলা জমেছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে রং খসে পড়েছে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ও মানসম্পন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করায় ভবনের স্থায়িত্ব ও কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে। এ নিয়ে মৌখিকভাবে মানসম্মত নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অনুরোধ জানালেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। তাই কাজ শেষ হতে না হতেই ভবনের পিলার, ছাদ, দেয়াল, মেঝের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা বলেন, বিগত প্রশাসনের দুর্নীতি ও লুটপাটের ফলে কাজের মান খুবই খারাপ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত  প্রধান প্রকৌশলী মো. কামাল হোসেন মোল্লা ও নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অদক্ষ লোকদের কাজ দিয়েছে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় দুই মাস না যেতেই অডিটোরিয়ামে ফাটল দেখা দিয়েছে।

এদিকে বিভিন্ন সময়ে কামাল মোল্লার অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম ও সহকারী এস্টেট অফিসার আশফাক আহমেদকে প্রকৌশল দপ্তর থেকে অন্য শাখায় বদলি করিয়েছেন কামাল মোল্লা।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী কামাল মোল্লা পতিত স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে ২০১২ সালে সিকৃবিতে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সত্ত্বেও দেদারসে তদারকি করছেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের কাজ। টাকার লেনদেনের মাধ্যমে যেকোনো কাজের চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির হোতা সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. জামাল উদ্দিন ভূঞা ও দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত খুকৃবির রেজিস্ট্রার ডা. শাহজাহানের অন্যতম দোসর কামাল মোল্লা বর্তমানে রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বিএনপিপন্থী সাজার চেষ্টা করছে। 

প্রকৌশল দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) কেন্দ্রীয় অডিটরিয়ামের নির্মাণকাজ ১২ বছর পর শেষ হয়েছে। প্রকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী, ২০১৩ সালে অডিটরিয়াম ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়ে ২০১৮ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বিগত প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার ফলে নির্মাণকাজ বিলম্ব হয়েছে বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. কামাল মোল্লা বলেন,অডিটোরিয়ামের প্লাস্টারে খালি চোখে দেখা যায় না এমন ফাটা দেখা দিয়েছে। এটাতে স্থাপনার কোনো ক্ষতি হবে না। তাকে বিতর্কিত করার জন্য একটি মহল এটাকে বড় করার চেষ্টা করছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত