সারাদেশে মানবিক জেলা প্রশাসক হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা আবারও সাহায্য বঞ্চিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত এক জুলাই বীরের পাশে দাঁড়ালেন মানবিক সহায়তা নিয়ে।
দিনের পর দিন বিভিন্ন মানুষের কাছে সাহায্যের আশায় ঘুরলেও কাউকেই পাশে পাননি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কেয়ারের নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক কো-অর্ডিনেটর। জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভুইগড় এলাকায় গত প্রায় ত্রিশ বছর ধরে সপরিবারে বসবাস করছেন তিনি।
অন্য সব অভিভাবকের মতো শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের নারকীয় হামলার পরে ঘরে বসে থাকতে পারেননি মধ্যবয়সী এই এনজিও কর্মী। ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার অল্প কিছুক্ষণ আগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের নিচ থেকে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে আসার সময় গুলিতে আহত হন শাহাজাহান। আন্দোলনকারীরা প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে পঙ্গু হাসপাতালে বাম হাতের কব্জিতে অপারেশন করে স্প্লিন্টার বের করেন চিকিৎসকরা।
বিদেশি অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার চাকরিও চলে গিয়েছিল জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের আগেই। তারপর আন্দোলনে গুলিতে বা হাত গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নতুন করে চাকরিও নিতে পারছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে জুলাই বীর শাহাজাহানের দুই ছেলে এবং এক কন্যা সবাই এখনো শিক্ষার্থী। টাকার অভাবে ছোট ছেলেকে ধনিয়া সরকারি কলেজে চান্স পেয়েও ভর্তি করতে পারেননি অসহায় এই বাবা।
এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হলে দুঃখ করে বলেন, বিদেশি উন্নয়ন সংস্থা কেয়ারের নারায়ণগঞ্জ জেলার কো-অর্ডিনেটর হিসেবে খুবই ভালো চাকরি করতাম। এখন আমি বেকার। পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে রাস্তায় নেমে ভিক্ষাও করতে পারছি না। কিন্তু আমার অবস্থা এখন ভিক্ষুকের মতোই।
আমি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আজই প্রথম দেখা করে আমার দুর্দশার কথা জানানো মাত্রই উনি আমাকে তাৎক্ষণিক ২০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও আমার পাশে থাকার জন্য আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।
ডিসি স্যার অনেক ভালো মানুষ। উনার জন্য দোয়া করি আল্লাহ উনাকে আরও বড় করুন, যোগ করেন শাহাজাহান।
আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তরকালে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম বলেন, জুলাই বীর শাহাজাহানদের মতো মানুষদের জন্য সরকার সাধ্যমতো সবকিছুই করবে। কারণ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কারণেই আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি এবং আমিও আজ এই অবস্থানে আসতে পেরেছি।
