মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে লস্করের শীর্ষ কমান্ডার নিহত

আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৭ পিএম

কাশ্মীরের বান্দিপোরায় নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো এক বিশেষ অভিযানে নিহত হয়েছে লস্কর-ই-তৈয়বার শীর্ষ কমান্ডার আলতাফ লাল্লি। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ভারতের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় এই ঘটনাকে একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। 

একইসঙ্গে, সম্প্রতি পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর চালানো বর্বরোচিত হামলার পর এ হত্যাকাণ্ড সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

টাইমস নাওয়ের লাইভ প্রতিবেদনে জানানো হয়, আজ শুক্রবার সকালে জম্মু ও কাশ্মীরের বান্দিপোরার একটি অঞ্চলে সশস্ত্র জঙ্গিদের অবস্থানের খবর পেয়ে অভিযান চালায় ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী। গোলাগুলির মুখোমুখি হওয়ার পর ঘটনাস্থলেই নিহত হয় আলতাফ লাল্লি। 

পুলিশের দাবি, আলতাফ শুধু লস্কর-ই-তৈয়বার নয়, একইসঙ্গে পাকিস্তান-সমর্থিত ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)-এর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন।

এই আলতাফ লাল্লিকে বহুদিন ধরেই খুঁজছিল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। দীর্ঘ সময় ধরে কাশ্মীরে লস্কর-ই-তৈয়বার নানা জঙ্গি তৎপরতার মূল পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।  

নিরাপত্তা বাহিনীর এই সাফল্য এমন এক সময় এলো, যখন কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের বহনকারী গাড়িবহরে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পুরো অঞ্চল জুড়ে শোক ও উত্তেজনার ছায়া নেমে এসেছে। ওই হামলার দায় ইতিমধ্যে স্বীকার করেছে টিআরএফ, যা মূলত লস্কর-ই-তৈয়বারই একটি শাখা সংগঠন এবং যার পেছনে সক্রিয়ভাবে কাজ করে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই।

পুলিশ সূত্র জানায়, পেহেলগাম হামলার সঙ্গে জড়িত দুই সন্দেহভাজন জঙ্গি—আদিল হুসেন ঠোকের ও আসিফ শেখ—এর সঙ্গে আলতাফের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। তাদের বাড়ি অনন্তনাগ ও পুলওয়ামা এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। হামলায় জড়িত বাকি দুইজন পাকিস্তানি নাগরিক, যাদের সন্ধানে ভারতীয় পুলিশ পুরস্কার ঘোষণা করেছে।

এদিকে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, আদিল ও আসিফ ২০১৮ সালে আটারি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করে এবং লস্কর-ই-তৈয়বার ক্যাম্পে সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। ২০২৪ সালে তারা ফিরে আসে কাশ্মীরে এবং কয়েক মাস পরই ঘটে পেহেলগামের নারকীয় হামলা।

লস্কর কমান্ডার আলতাফ লাল্লির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চাপে পড়ার আভাস মিলেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর ধারণা, জঙ্গিদের যোগাযোগ ও সমন্বয়ে বড় ধরনের বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি হবে এতে। তবে পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে গোটা উপত্যকাজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। 

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কেও নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত