শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

এপ্রিলেই দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, সঙ্গে থাকবেন দুই পুত্রবধূ

আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১২ এএম

নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি এপ্রিল মাসের মধ্যেই লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে দেশে ফিরবেন তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান এবং প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান।

ঢাকা ও লন্ডনের নির্ভরযোগ্য কূটনৈতিক সূত্রগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসভবনে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। তাকে দেশে ফেরাতে কাতার থেকে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সবকিছু পরিকল্পনামাফিক এগোলে আগামী বুধবারের মধ্যে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে ফিরবেন পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান এবং সৈয়দা শামিলা রহমান।

ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফেরাতে কাতারের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থার জন্য গত সপ্তাহে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের কাছে চিঠি পাঠান। 

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছেন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত নয়। এর মধ্যেও তিনি এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। চিকিৎসকরা বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে ফিরতে পরামর্শ দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিএনপির মহাসচিবের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। লন্ডন ও দোহার বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে দুর্নীতির একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি হন খালেদা জিয়া। পরে কোভিড-১৯ মহামারির সময় বিশেষ বিবেচনায় তাকে মুক্তি দেয় তৎকালীন সরকার।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি লাভ করেন। পরে তিনি দুর্নীতির দুটি মামলায় দেওয়া কারাদণ্ডের রায় বাতিলের সুযোগ পান আদালতের মাধ্যমে।

গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হয়। টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ২৫ জানুয়ারি তাকে লন্ডন ক্লিনিক থেকে তারেক রহমানের বাসায় স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘ ছয় বছরেরও বেশি সময় পর এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছেন তিনি। এর আগে কারাবন্দি অবস্থায় চারটি ঈদ পার করেছেন পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।

বর্তমানে তারেক রহমানের বাসায় থেকে তার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি লিভার সিরোসিস, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।

উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপারসন সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডন সফর করেছিলেন। এরপর থেকে আর কোনো বিদেশ সফরে যাননি।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত