বরগুনার তালতলীতে এক কিশোরীকে রাতভর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠার ৬ দিন পর মামলা নিয়েছে পুলিশ। দেশ রূপান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা হয় এবং পরে প্রধান আসামি রিনা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকাল ৩টার দিকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল মামলা নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নিশানাবাড়ি ইউনিয়নের তাঁতিপাড়া এলাকার বশিরের স্ত্রী রিনা বেগম তার আত্মীয় ইব্রাহিম নামে এক যুবকের সঙ্গে ভুক্তভোগী কিশোরীকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেয়। এরই পরিপেক্ষিতে ২২ এপ্রিল রাতে রিনা বেগমের বাড়িতে ভুক্তভোগী কিশোরী ও তার মাকে ডেকে নেওয়া হয়। এ সময় মায়ের অজান্তে ভুক্তভোগীকে প্রলোভন দেখিয়ে ইব্রাহিমের মোটরসাইকেলে তুলে দেন রিনা বেগম। ইব্রাহিম ওই কিশোরীকে নিয়ে রাত ১০টার দিকে উপজেলার নকরী খেয়াঘাটে নিয়ে যায়।
সেখানে একটি মাছের ঘেরে ইব্রাহিম ও তার চার বন্ধু মিলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। পরে সকালে ২০০ টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে ভুক্তভোগী কিশোরীকে চলে যেতে বলেন ইব্রাহিম। তখন কিশোরী বিয়ের কথা বললে ইব্রাহিম জানায়, তাকে বিয়ের জন্য নয়, ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এই বলে ইব্রাহিমসহ তার বন্ধুরা পালিয়ে যায়।
এদিকে মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ওই রাতেই ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় যায়। থানা থেকে বলা হয়ে সকালে যেতে। পরদিন ওই কিশোরীর খোঁজ মিললে ফের থানায় যাওয়া হয়। পরে বিস্তারিত বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। তবে এ ঘটনায় ওসি মো. শাহজালাল মামলা না নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে ধর্ষণের আলামত সংরক্ষণ করে রাখতে বলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
বিষয়টি ভুক্তভোগী পরিবার সাংবাদিকদের জানালে টনক নড়ে পুলিশের। এরপর ভুক্তভোগীর বাবাকে ডেকে এনে রিনা বেগমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হয়। রিনা বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বলেন, ‘আপনারা নিউজ করার পর রাতেই পুলিশ আমার বাড়িতে যায়। সকালে থানায় আসতে বলে। আমরা এসে মামলা করি। আমার এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চাই।’
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল বলেন, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামীকাল আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হবে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।