শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

বাবা ছাড়েন চাকরি, মায়ের রাত-দিন খাটুনিতে ভারত পেল বৈভব

আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২১ পিএম

ব্যাট হাতে আইপিএল মাতাচ্ছেন বৈভব সূর্যবংশী। গতকালই মাত্র ১৪ বছর বয়সে গুজরাটের বিপক্ষে হাঁকিয়েছেন ৩৫ বলে সেঞ্চুরি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো ক্রিকেটারের প্রথম সেঞ্চুরি এটি। ধারাভাষ্যকারা তার নাম দিয়েছেন ‘বস বেবি’। কিন্তু এই ‘বস বেবি’ কীভাবে এলেন ক্রিকেট দুনিয়ায়?

২০২৩ সালে একটি সাক্ষাৎকারে বৈভব বলেছিলেন, বিভিন্ন পর্যায়ের ক্রিকেটে ৪০টি সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন। তার কথার প্রমাণ মিলল গতকাল। রাজস্থানকে ৮ উইকেটে জিতিয়ে উপস্থাপকের প্রশ্নের জবাবে বৈভব বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে। আইপিএলে তৃতীয় ইনিংসেই প্রথম সেঞ্চুরি করলাম। খুব ভালো লাগছে। এত দিন ধরে, গত তিন-চার মাস ধরে আইপিএলের জন্য যে অনুশীলন করে আসছি, সেটির ফল পাচ্ছি মাঠে। আইপিএলে সেঞ্চুরি করা স্বপ্নের মতোই।’

ক্রিকেটার হয়ে ওঠার পেছনে বাবা-মাকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন বৈভব, ‘আমি এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি বাবা-মায়ের জন্য। ভোরে আমার অনুশীলনে যেতে হবে, এজন্য মা রাত ২টায় ঘুম থেকে উঠে যেতেন। উঠে আমার জন্য খাবার বানাতেন। স্রেফ ঘণ্টা তিনেক ঘুমাতেন। বাবা কাজ ছেড়ে দিয়েছিলেন আমার জন্য। বড় ভাই সেটা সামলাতেন। অনেক কষ্টে চলছিল সংসার। কিন্তু বাবা আমার পেছনে লেগেই ছিল- “তুমি পারবে, তুমি করবে”।’From struggles to success: Vaibhav Suryavanshi

বৈভব আরও বলেন, ‘যারা পরিশ্রম করেন, তারা কখনো ব্যর্থ হন না। সৃষ্টিকর্তা এসব দেখেন। আজকে যতটুকু ফল পেয়েছি, যতটা সফল হচ্ছি, সব বাবা-মায়ের জন্যই। অনেকদিন থেকেই তৈরি হচ্ছিলাম। আজকে ফল পেয়ে ভালো লাগছে। সামনে আরও ভালো করতে চাই, দলের জন্য অবদান রাখতে চাই। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের ম্যাচে প্রথম বলে ছক্কা আগেই মেরেছি। আমার ওপর তাই এরকম চাপ ছিল না যে ১০ বল খেলতে হবে। আমার ভাবনা পরিষ্কার ছিল যে, নিজের রাডারে বল পেলে আমি মারবই।’

রাজস্থান রয়্যালসে সুযোগ পাওয়ার গল্পও শোনান বৈভব, ‘ট্রায়ালে গিয়েছিলাম। সেখানে বিক্রম (রাজস্থানের ব্যাটিং কোচ) স্যার ছিলেন, ম্যানেজার রুমি স্যার ছিলেন। ট্রায়ালে আমি ভালো করেছিলাম। পরে ম্যানেজার রুমি স্যার বলেছিলেন, “তোমাকে আমাদের দলে নেওয়ার চেষ্টা করব”। দলে আসার পর তার থেকেই প্রথম ফোনকল পাই। তিনি অভিনন্দন জানান। পরে রাহুল (কোচ রাহুল দ্রাবিড়) স্যারের সঙ্গে তিনি কথা বলিয়ে দেন। খুব ভালো লাগছিল তখন। কারণ, রাহুল স্যারের সঙ্গে ট্রেনিং করা, ম্যাচ খেলা, টুর্নামেন্ট খেলা, তার সঙ্গে কাজ করা, অনুশীলন করা, একজন সাধারণ ক্রিকেটারের জন্য এসব স্বপ্নের চেয়ে কম নয়।’

বৈভবের স্বপ্ন এখন দেশের জন্য কিছু করা। জাতীয় দলে সুযোগ করে নিয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করা, ‘আগে আরও যা করতে হবে, দেশের জন্য ভারতের জন্য অবদান রাখতে হবে। ওভাবেই পরিশ্রম করতে হবে। ঘাম ঝরিয়ে যেতেই হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না এই পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছতে পারছি ও আমার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারছি, ততক্ষণ পরিশ্রম করে যাব। দেশের জন্য ভালে কিছু করার চেষ্টা করব।’

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত