মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

পিস্তল দিয়ে হত্যার হুমকি যুবকের, আতঙ্কে গ্রামবাসী

আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪৩ পিএম

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক মেসেঞ্জারে দেশীয় অস্ত্র ও পিস্তলের ছবি পাঠিয়ে আবদুল কুদ্দুস মিয়া (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার হুমকি দিয়েছে এক যুবক। হত্যার হুমকি দেওয়া ওই যুবকের নাম মুর্শিদুল মিয়া (২২)। তার বাড়ি পলাশবাড়ী উপজেলার পবনাপুর ইউনিয়নের পবনাপুর (চরেরহাট) গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের হামিদুল ইসলামের ছেলে।

এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ও তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে আবদুস কুদ্দুসসহ তার পরিবার। পরে ভুক্তভোগী আবদুল কুদ্দুস মিয়া পলাশবাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন পলাশবাড়ী থানার ওসি জুলফিকার আলী ভুট্টো। তিনি জানান, এ ঘটনায় তদন্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পলাশবাড়ী উপজেলার পবনাপুর গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের সঙ্গে মুর্শিদুল মিয়ার মামা আসাদুল ইসলামের জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। পরে স্থানীয়রা জমি সংক্রান্ত বিষয়টি সমাধান করে দেন। সম্প্রতি মুর্শিদুল ইসলাম তার মামার বাড়িতে এসে আবদুল কুদ্দুসসহ তার পরিবারকে মারধর করে। ঘটনার পর আবারও স্থানীয়রা মাতব্বররা আপস-মীমাংসা করে দেন। কিন্তু মুর্শিদুল মিয়া গত (১ এপিল) আবদুল কুদ্দুসের ফেসবুক মেসেঞ্জারে পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি ছবি পাঠিয়ে দিয়ে হত্যার হুমকি দেন।

আবদুল কুদ্দুন বলেন, মুর্শিদুল মিয়া মাদকাশক্ত। শুনেছি, চট্টগ্রামের চুরি ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত। এর আগে মুর্শিদুল বাড়ি এসে আমার আপন ভাই আব্দুল রাজ্জাককে টিপ ছুরি দিয়ে জখম করেছিল। স্থানীয়রা সেটির সমাধন করে দেয়। আমরা নিরীহ মানুষ। কখন যে আমাকে গুলি করে। শুনেছি, থানা থেকে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র ও পিস্তল মুর্শিদুলের কাছে রয়েছে। সেই অস্ত্র দিয়ে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ মামলা নেইনি। তবে জিডি নিয়েছে।

পাঠানো ছবিতে দেখা গেছে, মুর্শিদুল মিয়ার ডান হাতে একটি অত্যাধুনিক ছুরি ও বাম হাতে চায়নিজ কুড়াল এবং পাশে পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলির ছবি। ছবির ওপর লেখা তারা যেই খেলা শুরু করছে, সেটাই আমি শেষ করতে চাই, আর কোনও আপস নয়, প্রস্তুত থাকো... খেলা হবে। অন্য একটি ছবির ওপর লেখা আমার বাড়ির কুত্তাগুলা, যারা ফাঁকা মাঠে ঘেউ ঘেউ করো। তাদের বলতেছি, তোদের সময় শেষ হয়ে আসছে কয় রাউন্ড নিতে পারবি তোরা, রেডি থাক, খেলা হবে।

একাধিক এলাবাসী বলেন, মুর্শিদুল পিস্তলের ছবি ও চায়না অস্ত্র মেসেঞ্জারে পাঠানোর ঘটনায় অবাক হয়েছি। ৫ আগস্টের পর মুর্শিদুলে চলাফেলায় কিছুটা পরিবর্তন দেখা গেছে। সম্প্রতি সময়ে সে পরপর দুইবার কুদ্দুসকে মারধর করেছে। মুর্শিদুলকে গ্রেপ্তার করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তারা। যেকোনও সময় প্রাণনাশের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয়ে মুর্শিদুল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তাব্য পাওয়া যায়নি। তবে মুর্শিদুলের বাবা হামিদুল ইসলাম পিস্তল পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমার ছেলে ভুল করেছে। তার কাছে পিস্তল আছে কি না আমি জানি না।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত