শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

৫ মে থেকে বাজারে আসবে সাতক্ষীরার প্রসিদ্ধ আম

আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৬ পিএম

আগামী ৫ মে থেকে বাজারে আসবে সাতক্ষীরার আন্তর্জাতিক প্রসিদ্ধ আম। বুধবার (৩০ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিক সভায় এ মৌসুমের আমপঞ্জিকা ঘোষণা করা হয়েছে।

সাতক্ষীরার আমের খ্যাতি শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও। ২০১৫ সাল থেকেই এই জেলার আম ইউরোপের বাজারে রপ্তানি হয়ে আসছে। সেই সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং বিশুদ্ধ ও নিরাপদ আম বাজারজাতকরণের লক্ষে সাতক্ষীরার আম সংগ্রহের সময়সূচি প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। সভায় জেলার আম চাষি, ব্যবসায়ী, কৃষি কর্মকর্তা ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম বিকেলে খামার বাড়িতে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ৫ হাজার আম বাগান রয়েছে। চলতি বছর এখান থেকে এবার ৬২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি জাতের আম পরিপক্ক হওয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। আগেভাগে পাড়লে আমের স্বাদ ও গুণগত মান কমে যায়, ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির সুযোগ ক্ষুণ্ণ হয়। ২০১৫ সাল থেকে সাতক্ষীরার আম ইউরোপে নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে, যা জেলার অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

সভায় আরও জানানো হয়, এই মৌসুমে আম সংগ্রহ ও পরিবহনে নজরদারি করতে মাঠ পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত, চেকপোস্ট ও বিশেষ মনিটরিং টিম কাজ করবে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে চালানো হবে প্রচার অভিযানও।

সভায় জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ জানান, সাতক্ষীরার গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া ও আম্রপালি জাতের আমের কদর আছে দেশ ও বিদেশে। আবহাওয়া ও মাটির গুণাগুণের কারণে এখানকার আম দেশের অন্য এলাকার তুলনায় অগ্রিম পরিপক্ব হয় এবং স্বাদেও অন্যন্য। আগে বাজারে ওঠার কারণে বেশি দামে বিক্রিও হয় এই আম। সাতক্ষীরার আমের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং বিশুদ্ধ ও নিরাপদ আম বাজার জাত করণের লক্ষে সাতক্ষীরার আম সংগ্রহের একটি সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।

নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আগামী ৫ মে থেকে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস ও দেশীয় বৈশাখী আমসহ স্থানীয় জাতের আম, ২০ মে হিমসাগর, ২৭ মে ন্যাংড়া এবং ৫ জুন থেকে আম্রপালি আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করা যাবে।

তিনি আরও বলেন, এই সময়সূচির আগে অপরিপক্ব আম সংগ্রহ, সংরক্ষণ বা বাজার জাত করণে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কৃষি বিভাগের সহায়তায় এ বিষয়ে কঠোর নজরদারি থাকবে।

জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ আরও জানান, এই বছর সাতক্ষীরা জেলা থেকে প্রায় ৭০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। রপ্তানি যোগ্য আম নিশ্চিত করতে গুণগতমান রক্ষা এবং নির্ধারিত সময়ের আগে আম সংগ্রহ বন্ধ রাখা হবে।

প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরার আম শুধু বাংলাদেশের বাজারে নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও জনপ্রিয়। জেলার আবহাওয়া ও মাটি এই অঞ্চলের আমকে করেছে সুস্বাদু, ঘ্রাণযুক্ত এবং দীর্ঘস্থায়ী, যা আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য। 

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত