ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার চলমান আন্দোলনে কিছু বিভ্রান্তিকর স্লোগান নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে। এ প্রেক্ষাপটে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছে—আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আওতায় দলীয় বিচারের বিধান সংযোজন এবং জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের দাবিতে আয়োজিত আন্দোলনে নানা রাজনৈতিক দল, মত ও সাধারণ ছাত্র-জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করলেও একটি বিশেষ পক্ষ দলীয় এবং ইতিহাসবিরোধী স্লোগান দিয়ে জাতীয় ঐক্যের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করেছে।
বিবৃতিতে এনসিপি দ্ব্যর্থহীনভাবে জানিয়েছে, তাদের কোনো সদস্য চলমান আন্দোলনে দলীয় স্লোগান বা এ দেশের মানুষের সংগ্রামের পরিপন্থী কোনো বক্তব্য দেয়নি। ফলে, আন্দোলনে ওঠা বিতর্কিত স্লোগানের দায় সংশ্লিষ্ট পক্ষেরই বহন করা উচিত, এনসিপিকে এর সঙ্গে জড়ানো সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত।
জাতীয় নাগরিক পার্টির দাবি, তাদের সদস্যদের বক্তব্যে ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের সংগ্রামের প্রতিফলন ছিল। দলটি আরও জানায়, আন্দোলনের সময় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের বিরোধিতা করা হলেও অংশগ্রহণকারীরা তা দৃঢ়ভাবে সম্পন্ন করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের সংগ্রামের স্বীকৃতি এবং মর্যাদা রক্ষা করা অপরিহার্য। যেসব দল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে এবং গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে, তাদের জাতির সামনে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে জাতীয় ঐক্য গঠনে ভূমিকা রাখা উচিত।
চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় এনসিপি মনে করে, চব্বিশের অভ্যুত্থানে যারা ভূমিকা রেখেছেন, তাদের অবশ্যই বাংলাদেশপন্থী অবস্থান বজায় রাখতে হবে। এছাড়া, পূর্ববর্তী রাজনৈতিক মতাদর্শ বা অবস্থান থেকে উৎসারিত বিভাজন বা অনৈক্য নিরসনে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের দায়িত্ব রয়েছে জনগণের কাছে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার।
বিবৃতির শেষে দলটি মন্তব্য করে, ‘মুজিববাদকে সামগ্রিকভাবে পরাস্ত করতে হলে জনগণের মধ্যে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প নেই।’ একই সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টি সকল রাজনৈতিক পক্ষকে দেশের সুন্দর ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের স্বার্থে দায়িত্বশীল আচরণ এবং দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানায়।