বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

‘সাফল্যের’ মাধ্যমে ৭৯০০টি ঋণ বিতরণ

আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, ০৬:৪২ এএম

দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে চলেছে ব্র্যাক ব্যাংকের ডিজিটাল অর্থায়ন প্রোগ্রাম ‘সাফল্য’। জামানতবিহীন এই ঋণসুবিধা পাওয়া যায় দ্রুততম সময়ে, যেখানে প্রয়োজন হয় নামমাত্র কিছু কাগজপত্রের। ফলে এই ডিজিটাল লোন প্রান্তিক এলাকার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য অর্থায়ন সুবিধাকে করেছে আরও সহজ।

গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ‘সাফল্য’-এর মাধ্যমে ৭ হাজার ৯০০টিরও বেশি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে, যা অর্থনৈতিক পরিসরে মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করে চলেছে। এই ঋণের সুবিধাভোগীরা কৃষিক্ষেত্রে উন্নত ফলন, আয় বৃদ্ধি এবং নিজেদের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তনের বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংককে জানিয়েছেন।

বেসরকারি খাতের এ ব্যাংকটি বলছে, কৃষক, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের মতো ঋণসুবিধার বাইরে থাকা শ্রেণি- পেশার মানুষের জন্য এই ডিজিটাল লোন ‘সাফল্য’ বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রক্রিয়া হওয়ায় প্রচলিত ঋণব্যবস্থায় থাকায় চ্যালেঞ্জগুলো এখানে থাকছে না। স্বল্প ডকুমেন্টেশনের মাধ্যমে মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই এই ঋণ পাওয়া যায়। প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষের জন্য এই সুবিধা এক সময় স্বপ্ন মনে হলেও বর্তমানে এটিই এখন বাস্তবতা।

শেরপুরে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হওয়া এই ডিজিটাল ঋণসুবিধা বর্তমানে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, জামালপুর, সাতক্ষীরা এবং চর অঞ্চলসহ ১৫টিরও বেশি অঞ্চলের মানুষকে দেওয়া হচ্ছে। ‘সাফল্য’ ডিজিটাল লোনের আওতায় এসব অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ৫০০ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণসুবিধা পাচ্ছেন। আবেদন, যাচাইকরণ এবং ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ডিজিটাইজড হওয়ায় গ্রাহকরা মাত্র কয়েক মিনিটেই এই ঋণ নিতে পারছেন, যেখানে প্রচলিত পদ্ধতিতে ঋণ পেতে গ্রাহকদের সপ্তাহব্যাপী নানা দৌড়ঝাঁপের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।

গ্রাহকরা ব্র্যাক ব্যাংকের যেকোনো শাখা, এসএমই অফিস, এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের মাধ্যমে অথবা ঘরে বসে ব্র্যাক ব্যাংকের ডিজিটাল লোন প্ল্যাটফর্ম ‘সুবিধা’ অ্যাপ এবং ডিজিটাল ব্যাংকিং অ্যাপ ‘আস্থা’ ব্যবহার করে সহজেই এই ঋণের আবেদন করতে পারবেন। গ্রাহক আবেদনের পর এআই-ভিত্তিক ক্রেডিট স্কোরিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকের ঋুপ্রাপ্তির যোগ্যতার বিষয়ে নিশ্চিত হলেই এই ঋণের ডিজিটাল বিতরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। গ্রাহকরা চাইলে ডিজিটাল কিংবা প্রচলিত চ্যানেল উভয় মাধ্যমেই ঋণ পরিশোধ করতে পারেন। সময়মতো ঋণ পরিশোধ করা হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রাহকের ঋণসীমা বৃদ্ধি পেয়ে যায়, যা গ্রাহকের ঋণের দায়িত্বশীল ব্যবহার এবং আর্থিক  টেকসই অবস্থাকে উৎসাহিত করে।

অর্থায়নের সুবিধাপ্রাপ্ত কৃষকরা বীজ বপনের মৌসুমের শুরুতে ঋণ নিয়ে ফসল ওঠার পর সেই ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ পান। ফসলচক্রের সঙ্গে মিল রেখে এই ঋুসুবিধা দেওয়ায় কৃষকরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হচ্ছেন, যা ইনফরমাল ঋণব্যবস্থায়  কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না।

এই ডিজিটাল লোনের সম্প্রসারণ এবং দায়িত্বশীল অর্থায়ন নিশ্চিত করতে ব্র্যাক ব্যাংক করপোরেট প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কোম্পানি এবং ফিনটেকের সঙ্গে অংশীদারত্ব অব্যাহত রাখছে, যাতে তৃণমূল পর্যায়ের আরও বেশি মানুষের কাছে এই ঋুসুবিধা পৌঁছে দেওয়া যায়।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত