শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি করলে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার ইঙ্গিত ইরানের

আপডেট : ১৬ জুন ২০২৫, ১১:১৩ পিএম

পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পুনরায় আলোচনা শুরু করতে মধ্যস্থতাকারী উপসাগরীয় দেশগুলোর মাধ্যমে ইঙ্গিত দিচ্ছে ইরান। তবে তার আগে ইসরায়েলের সঙ্গে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর চায় তেহরান।

মধ্যস্থতাকারী উপসাগরীয় দেশ কাতার, সৌদি আরব ও ওমানের মাধ্যমে ইসরায়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এমন বার্তা পাঠাচ্ছে ইরান। সোমবার এক প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাতে এমনটি জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

উপসাগরীয় অঞ্চলের সঙ্গে ইরানের যোগাযোগের বিষয়ে অবহিত এক কর্মকর্তার বরাতে বার্তা সংস্থাটির খবরে বলা হয়, পরমাণু আলোচনায় ফিরে আসার মধ্যস্থতা করতে তেহরান কাতার ও ওমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তবে প্রথমে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ওপর জোর দিয়েছে তারা।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ইরান ওমান ও কাতারকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে— তারা আক্রমণের মুখে থাকা অবস্থায় আলোচনায় বসবে না। ইসরায়েলি হামলার জবাব দেওয়া শেষ হলেই কেবল আলোচনা শুরু করবে দেশটি।

তবে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি কোনো পক্ষই। এদিকে গতকাল রবিবার মাস্কটে যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের ষষ্ঠ দফার যে বৈঠকের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, শুক্রবার ইসরায়েলের অতর্কিত হামলার একদিন পর তা বাতিল করা হয়েছে।

রয়টার্স আরও জানিয়েছে, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পুনরায় আলোচনা শুরু করতে একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করছে মধ্যস্থতাকারী ওমান।

আঞ্চলিক সূত্রগুলো রয়টার্সকে জানিয়েছে, ওমানের খসড়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে ন্যূনতম এক থেকে তিন বছরের জন্য সব ধরনের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ স্থগিতের বিষয়টি মেনে নিতে এবং আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রস্তাবিত চুক্তির লক্ষ্য হবে আস্থা তৈরি করা, যাতে ইরান ৩.৬৭% বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারে এবং একটি আন্তর্জাতিক ইউরেনিয়াম কনসোর্টিয়ামকে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেয়।

ইরানের একটি সূত্র বলেছে, ইসরায়েল অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলে তেহরান এক বছরের জন্য পরমাণু সমৃদ্ধকরণ স্থগিত, আইএইএর পরিদর্শকদের পূর্ণ প্রবেশাধিকার মেনে নিতে পারে।

বিনিময়ে সূত্রটি বলেছে, ইরান আশা করে যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির অধিকারকে স্বীকৃতি দেবে এবং সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।

ইরানের ওই দুই সূত্র জানিয়েছে, তেহরান তুরস্ককে ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছে। এছাড়া রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ট্রাম্প ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়েছেন। তবে রাশিয়া বৃহত্তর কূটনৈতিক ভূমিকা পালন করবে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

এ বিষয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইরান ‘নরকের দরজা খুলে দেওয়ার’ অঙ্গীকার করলেও ইরানের দুটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল হামলা বন্ধ করলে তেহরান হামলা বন্ধে ইচ্ছুক বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে।

ইরানের একটি সূত্র জানিয়েছে, তেহরান যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়া শুরুর ব্যাপারে আগ্রহী, কারণ এই যুদ্ধ পুরো অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এর পরিণতি কয়েক দশক ধরে চলতে পারে।

 

 

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত