বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

মিরপুরে মানি এক্সচেঞ্জে সশস্ত্র ডাকাতি, গ্রেফতার ৬

আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫, ০৪:১৬ পিএম

রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় একটি মানি এক্সচেঞ্জ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় অস্ত্রসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মাইক্রোবাসের সূত্র ধরে পেশাদার এই ডাকাত চক্রের সদস্যদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন চক্রের প্রধান জলিল মোল্লাসহ মোস্তাফিজ (৫০), পলাশ (২৮), দিপু (৫০), সোহাগ (৩৫) ও জাফর (৩৩)। উদ্ধার করা হয়েছে একটি মাইক্রোবাস, তিনটি মোটরসাইকেল, পিস্তল, গুলি, জাল টাকা এবং বিদেশি মুদ্রা।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম আজ বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে বলেন, গত ২৭ মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাহমুদ মানি এক্সচেঞ্জের মালিক রাসেল ও তার ভগ্নিপতি জাহিদুল হক চৌধুরী মিরপুর-১১ সি ব্লকের বাড়ি থেকে ২১ লাখ টাকা ও বিভিন্ন দেশের মুদ্রা নিয়ে মিরপুর-১০ নম্বর অফিসে যাচ্ছিলেন। শেরে বাংলা স্টেডিয়াম ও ফায়ার সার্ভিসের মাঝামাঝি গলির মুখে মোটরসাইকেলযোগে ওঁৎ পেতে থাকা সাত থেকে আটজন মুখোশধারী ডাকাত তাদের গতিরোধ করে।

ডাকাতদের একজন পিস্তল ঠেকিয়ে টাকা ভর্তি ব্যাগ ছিনিয়ে নেন। বাধা দিলে আরেকজন গুলি চালায় এবং একজন চাপাতি দিয়ে জাহিদুলের কোমরে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি রাস্তায় পড়ে যান। ডাকাতরা চারটি মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়।

একজন পথচারী মোবাইল ফোনে ঘটনাটি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি করে।

আহত জাহিদুল হক চৌধুরী মিরপুর মডেল থানায় ডাকাতি মামলা করেন। ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে ডিবির বিভিন্ন টিম ঘটনাস্থলে নামে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি হাই-এস মাইক্রোবাস শনাক্ত করে এবং চালক জাফরকে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে।

পরে ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ ও যশোরে একযোগে অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতা জলিল মোল্লাসহ আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতি, হত্যা ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ডাকাতির ৫ লাখ ৩ হাজার টাকা, ১০৬টি বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, ২ লাখ ১২ হাজার টাকার জাল নোট, একটি বিদেশি পিস্তল, দুইটি গুলি, একটি চাপাতি ও তিনটি খেলনা পিস্তল।

তদন্তে জানা গেছে, এই চক্রের সদস্যরা এর আগেও বিভিন্ন গুণ্ডামি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। ২৪ জানুয়ারি কামরাঙ্গীরচর এলাকায় গুলি চালিয়ে ৫০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই এবং ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর ধানমন্ডি সাত মসজিদ রোডে গুলি চালিয়ে ৫২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় এদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

ডিবি সূত্র জানায়, এই চক্র আধুনিক প্রযুক্তি, আগ্নেয়াস্ত্র ও বিভিন্ন ছদ্মবেশে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করতো। অপরাধীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি লুণ্ঠিত সম্পদ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত