
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাসে পর্নোগ্রাফি নিয়ে আলোচনা করার অভিযোগ উঠেছে স্কুলের প্রধানশিক্ষিকার বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা। আর চাপের মুখে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন প্রধানশিক্ষিকা। শনিবার (২৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্লোরিডার তাল্লাহাসি ক্লাসিক্যাল স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা হোপ ক্যারাসকিল্লা ষষ্ঠ শ্রেণিতে রেনেসাঁর শিল্পকলা প্রসঙ্গে ক্লাস নিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে ইতালির বিখ্যাত শিল্পী মাইকেলেঞ্জেলোর ভাস্কর্য ‘ডেভিড’ নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। এদিকে বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন অভিভাবকরা। তাদের অভিযোগ, নগ্ন পুরুষের মূর্তিটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পর্নোগ্রাফি চিনিয়ে দিয়েছেন প্রধানশিক্ষিকা।
তারা প্রধানশিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের কাছে অভিযোগ দেন এবং পরবর্তীতে এ ধরনের পাঠ দেওয়ার আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করে অভিভাবকদের অবগত করতে বলা হয়। এরপরেই প্রধানশিক্ষিকাকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। পদত্যাগের পর সংবাদমাধ্যমে শিক্ষিকা বলেন, আমি অত্যন্ত দুঃখিত এই প্রতিষ্ঠানে আমার দীর্ঘ যাত্রা এ ভাবে শেষ হল।
১৫০১ থেকে ১৫০৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নির্মিত হয় মাইকেলেঞ্জেলোর ভাস্কর্য ‘ডেভিড’। এই মূর্তিকে কেন্দ্র করে শিল্পের স্বাধীনতা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘ দিনের। ফ্লোরিডার শিক্ষিকা ক্লাসে ‘ডেভিড’ ছাড়াও রেনেসাঁ শিল্পকলার আরও একাধিক বিখ্যাত ভাস্কর্য নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। কিন্তু বিতর্কের মাঝে পদত্যাগ করতে হলো তাকে।
চীনের বৃহত্তম শহর সাংহাই ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণতম মে দিবসের কথা জানিয়েছে, যা আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। সোমবার (২৯) নগরীর আবহাওয়া দপ্তর এ কথা জানিয়েছে।
পরিষেবাটির অফিসিয়াল ওয়েব অ্যাকাউন্টের একটি পোস্টে বলা হয়েছে, চীনের বৃহত্তম শহর জুজিয়াহুই স্টেশনে দিনের তাপমাত্রা ৩৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এটি গত ১০০ বছরের মধ্যে মে মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।
চীনের পূর্বাঞ্চলীয় শহরের মেট সার্ভিস বলেছে, পরে বিকেলে মেট্রো স্টেশনে তাপমাত্রা ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যায়।
দেশটির আবহাওয়া দপ্তর বলেছে, ওই তাপমাত্রা অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে। আগে যা ছিল ৩৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি ছিল ১৮৭৬, ১৯০৩, ১৯১৫ ও ২০১৮ সালের মে মাসের তাপমাত্রার সর্বোচ্চ রেকর্ড।
জাতিসংঘ মে মাসে একটি সতর্কতা জারি করে বলেছে ২০২৩ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণতম সময়কাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন এবং এল নিনোর সংমিশ্রণে তাপমাত্রা অনেক বাড়বে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) তথ্যানুসারে, তাপমাত্রার লক্ষ্যমাত্রাকে অতিক্রম করার দুই-তৃতীয়াংশ সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এটি অন্তত একবার ঘটবে। এর প্রভাবে জলবায়ুর পরিবর্তন হবে।
বিরোধীদের অব্যাহত সমালোচনার মধ্যেই রাজনৈতিক সচিবের পদ থেকে ছেলে শোতারো কিশিদাকে (৩২) সরিয়ে দিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। সোমবার (২৯ মে) সরকারি বাসভবনে ‘অনুচিত আচরণের’ অভিযোগে শোতারোর বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে একটি সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, শোতারো গত বছর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এক পার্টিতে আত্মীয়দের দাওয়াত করেন। এ সময় তারা প্রেস কনফারেন্স করার মতো করে ছবি তুলেন এবং লাল-গালিচায় মোড়ানো সিঁড়িতে ছবির জন্য পোজ দেন।
সাধারণত লাল-গালিচায় মোড়ানো সিঁড়িতে ছবি তুলে জাপানের প্রধানমন্ত্রীরা ঐতিহ্যগতভাবে তাদের নতুন ক্যাবিনেট লাইনআপ প্রকাশ করেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এভাবে ছবি তোলা অসম্মানজনক হিসেবে দেখা হয়।
প্রধানমন্ত্রী কিশিদা বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক সচিব হিসেবে তার এমন আচরণ করা উচিত হয়নি। আমরা তাকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শোতারো আগামী ১ জুন পদত্যাগ করবেন।’
এর আগে ছেলেকে তার কৃতকর্মের জন্য তিরস্কার করেছিলেন বাবা কিশিদা। কিন্তু বিরোধী দলগুলো শুধু সমালোচনা করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা তার পদত্যাগ দাবি করে। অবশ্য এর আগেও ছেলের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েন কিশিদা। যেহেতু তার ছেলে ইউরোপে মন্ত্রীদের জন্য স্যুভেনির কিনতে গিয়ে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের অক্টোবরে রাজনৈতিক সচিব পদে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে শোতারো প্রধানমন্ত্রীর জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাকে নিয়োগ দেওয়ার পর স্বজনপ্রীতির অভিযোগ করা হয়। যদিও সচিব হিরোকাজু সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর বড় ছেলেকে তার ‘ব্যক্তিত্ব এবং অন্তর্দৃষ্টি’র ভিত্তিতে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
সূত্র: রয়টার্স, জাপান টাইমস
আগামী ২৩ জুলাই জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। সোমবার (২৯ মে) তিনি এ ঘোষণা দেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আগের দিন রবিবার আঞ্চলিক নির্বাচনে সানচেজের সোশ্যালিস্ট পার্টির ভরাডুবির পর এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে রাজা ফিলিপ ষষ্ঠকে সংসদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী সানচেজ। দেশটির জাতীয় টেলিভিশনে প্রচারিত বিবৃতিতে সানচেজ বলেন, গতকালের নির্বাচন একটি স্থানীয় ও আঞ্চলিক নির্বাচন ছিল। কিন্তু এর ফলাফল ভিন্ন বার্তা দেয়। সানচেজ এর আগে বলেছিলেন যে তিনি তার চার বছরের মেয়াদ শেষ করতে চান।
রবিবারের নির্বাচনে রক্ষণশীল পপুলার পার্টি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। দলটি দেশের পূর্বে ভ্যালেন্সিয়া আঞ্চলিক সরকার এবং দক্ষিণে সেভিল সিটি হলসহ আঞ্চলিক এবং নগর সরকারগুলোতে বর্তমান সমাজতন্ত্রীদের পরাজিত করেছে।
৫১ বছর বয়সী সানচেজ তৎকালীন রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয়ের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে জয়ী হয়ে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হন। পরের বছর ২০১৯ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করেন সানচেজ, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হন। পরে বাধ্য হয়ে বামপন্থী পোডেমোস পাটির সমর্থন নিয়ে জোট সরকার গঠন করেন। রবিবারের নির্বাচনে সানচেজের পার্টিকে সমর্থন দেওয়া ওই পার্টিরও ভরাডুবি হয়।
নাটকীয় এক ভিডিওতে চলন্ত এক শার্টল বাসে চালক এবং যাত্রীকে পরস্পরের বিরুদ্ধে গুলি বিনিময় করতে দেখা গেছে। চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের ওই বাসে চালকের সঙ্গে যাত্রীর বাকবিতণ্ডা শুরু হলে নাটকীয় এ ঘটনা ঘটে।
পরে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
বাকবিতণ্ডার সময় বাসচালক বাহুতে এবং যাত্রী পেটে আঘাত পান বলে স্থানীয় শার্টল ট্রানজিট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। নাটকীয় এই ঘটনার বাসচালক ডেভিড ফুলার্ড এবং সন্দেহভাজন যাত্রী ওমরি টোবিয়াস( ২২)।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বরাতে সোমবার(২৯ মে) এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাসচালক যখন ওই যাত্রীকে তার পরবর্তী নির্দিষ্ট স্টপেজে নামার জন্য অপেক্ষা করতে বলেন , তখন তিনি চালকের সঙ্গে ঝগড়া শুরু করে দেন এবং এক পর্যায়ে তারা দুজনেই উত্তপ্ত তর্কে জড়িয়ে পড়েন।
পরে স্থানীয় শার্টল ট্রানজিট কর্তৃপক্ষ গুলি বিনিময়ের এই ভিডিওটি প্রকাশ করে। সেখানে উত্তেজিত ওই যাত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘এসো আমাকে স্পর্শ করো , আমি তোমাকে সাহস দিচ্ছি।’
তারা আরও জানায়, এরপরই ওই যাত্রী একটি বন্দুক বের করেন এবং অন্যদিক থেকে বাসচালককেও একটি আগ্নেয়াস্ত্র বের করতে দেখা যায়। তারা দুজনেই একে অপরকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় দুজনের ছোড়া গুলিতে বাসের কাঁচের পার্টিশন ভেঙে যায়।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সময় বাকি যাত্রীদের পেছেনের দিকে ঠেলে দেন চালক এবং সন্দেহভাজন ওই যাত্রীকে আরেক রাউন্ড গুলিও ছোড়েন তিনি।
পরে ট্রানজিট সিস্টেম জানায়, দুজনের নাটকীয় এই গোলাগুলি শেষ হলে বাসটি থামিয়ে সামনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান চালক । আর যাত্রী তার আহত পেট নিয়ে বাসের পেছন দিক থেকে বেরিয়ে যান।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে শার্টল মেক্লেনবার্গ পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, তারা টোবিয়াসের বিরুদ্ধে মারাত্মক অস্ত্র দিয়ে হামলা, গুরুতরভাবে আহত করা , হুমকি দেওয়া এবং গোপন আগ্নেয়াস্ত্র বহনের অভিযোগ এনেছে।
তবে ডেভিড ও টোবিয়াস দুজনেই স্থিতিশীল রয়েছে।
কানাডায় বিয়েবাড়িতে ঢুকে অমরপ্রীত সামরা (২৮) নামে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক পাঞ্জাবি গ্যাংস্টারকে হত্যা করা হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কানাডা থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্র ভ্যাঙ্কুভার সান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভ্যাঙ্কুভারের ফ্রেসারভিউ ব্যাংকোয়েট হলে রাত দেড়টা নাগাদ একটি বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানেই নিমন্ত্রিত ছিলেন অমরপ্রীত এবং তার ভাই রবিন্দর। বিয়েবাড়ির নাচগানে যোগ দিয়েছিলেন অমরপ্রীতও।
এক পর্যায়ে বাজনা বন্ধ হয়ে গেলে ডান্স ফ্লোর থেকে নেমে আসেন অমরপ্রীত। সেই সময়ই তাকে পর পর গুলি করা হয়। বুকে হাত দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন গ্যাংস্টার। রক্তে ভেসে যায় এলাকা। হুড়োহুড়ির সুযোগ নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালায় আততায়ীরা। অমরপ্রীতকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, অমরপ্রীত এবং তার ভাই ভ্যাঙ্কুভারের কুখ্যাত ইউএন গ্যাংয়ের (ইউনাইটেড নেশনস গ্যাং) সদস্য। গ্যাংওয়ারের কারণেই তার প্রাণহানি হয় বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
অমরপ্রীতের বিরুদ্ধে কানাডায় একাধিক মামলা রয়েছে। ২০২২ সালের আগস্টে কানাডা পুলিশ একটি তালিকা প্রকাশ করে। সেই তালিকায় থাকা ১১ জনের মধ্যে ৯ জনই ছিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত পাঞ্জাবি। আর তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন অমরপ্রীত এবং তার ভাই রবিন্দর।
প্রথম সেট ২৫ মিনিট, দ্বিতীয়টি ২৮ মিনিটে জিতলেন কার্লোস আলকারাজ। মনে হচ্ছিল কোয়ালিফায়ার ফ্যাভিও কোবোলিকে বুঝি উড়িয়েই দিচ্ছেন শীর্ষ বাছাই।
না, তৃতীয় সেটতে প্রতিরোধ গড়লেন ইতালিয়ান। সময় গড়ালো ঘন্টায়। শেষপর্যন্ত জয় এসেছে ৬৬ মিনিটে। ৬-০, ৬-২, ৭-৫ গেমে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ জিতে রাফায়েল নাদালের উত্তরসুরি ক্লে কোর্টের সর্বোচ্চ আসর শুরু করলেন।
নাদালের চোটজনিত অনুপস্থিতিতে শীর্ষবাছাই আলকারাজ। ২০২১ এ তৃতীয় রাউন্ড, গতবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছিলেন। এবার আরো এগোলে সেমিফাইনালে নোভাক জকোভিচের সংগে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা।
সে দেখা যাবে। আপাতত দ্বিতীয় রাউন্ডে আলকারাজকে টপকাতে হবে জাপানের টি. দানিয়লেকে।
আইপিএলের পঞ্চম শিরোপা জিততে চেন্নাই সুপার কিংসের চাই ১৫ ওভারে ১৭১ রান। আহমেদাবাদে রাত ১২.৪০ মিনিটে শুরু হবে খেলা। গুজরাট টাইট্যান্সের ২১৪ রানের জবাবে খেলতে নেমে ৩ বলে ৪ রান করার পর বৃ্স্টিতে বন্ধ হয় ফাইনাল। অর্থাৎ বাকি ১৪.৩ ওভারে আরো ১৬৭ রান চাই ধোনীর দলের।
নতুন পে-স্কেল কিংবা মহার্ঘ ভাতা নয়, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়বে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট অনুযায়ী। তাদের বেতন প্রতি বছর যতটা বাড়ার কথা এবার তার চেয়ে বেশি বাড়বে। আর তা চলতি বছরের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ানো হবে। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশের বাইরে বাড়ানো হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত প্রায় এক বছর ধরে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের বেশিরভাগের একমাত্র আয় বেতন-ভাতা। বৈশি^ক মন্দার কারণে সরকারও খানিকটা সংকটে আছে। এ পরিস্থিতিতে পে-স্কেল দেওয়ার মতো বড় ধরনের ব্যয় বাড়ানো সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলে সরকারের ওপর চাপ বেশি হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সরকারি কর্মরতদের খানিকটা স্বস্তি দিতে কোন খাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় এমন প্রস্তাব চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বাজেটবিষয়ক বিভিন্ন বৈঠকে সরকারি নীতিনির্ধারকরাও এ বিষয়ে আলোচনা করেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই করে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করে। চলতি মাসে গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এ বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে কত বাড়তি ব্যয় হবে তা হিসাব করে পরের বৈঠকে উপস্থাপন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের ব্যয় না বাড়িয়ে একটা উপায় বের করতেও বলেন। শেষ পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে নিজেই জানিয়েছেন।
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা ২০১৫ সালের বেতন কমিশন অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ বেতন কমিশন প্রণীত হয়েছিল। এ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, আর নতুন বেতন কমিশন গঠন করা হবে না। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বাড়ানো হবে। এ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তা হয়ে আসছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি হিসাব অনুযায়ী, দেশে সরকারি কর্মচারী ১৪ লাখ। বিভিন্ন করপোরেশন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে হিসাব করলে প্রায় ২২ লাখ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে নিয়মিত ইনক্রিমেন্টের বাইরে আরও কতটা বাড়ানো যায় তা হিসাব করে নির্ধারণ করা হবে। এ কাজ করতে বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পর আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে যাচাই-বাছাই শেষে ইনক্রিমেন্টের হার সুপারিশ করবে। এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে বিদ্যমান ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে প্রতি মাসে বেতন বাড়ানো হবে, নাকি গড় মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে ইনক্রিমেন্টের হার বাড়ানো হবে, তা খতিয়ে দেখা হবে। ২০তম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সবার জন্য একই হারে বেতন বাড়নো হবে কি না, তা আরও খতিয়ে দেখা হবে। চূড়ান্ত হিসাব অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে প্রকাশ করা হবে। যে তারিখেই প্রকাশ করা হোক না কেন, আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকরী ধরা হবে।
এখানে মহার্ঘ ভাতা ১০ শতাংশ দেওয়া হলে এ হিসাবে ৪ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ৬ হাজার কোটি এবং ২০ শতাংশ দেওয়া হলে ৮ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে আগামী অর্থবছরে সরকারের ব্যয় বাড়বে। আর এতে সরকার ব্যয় কমিয়েও সরকারি কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টিতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো পথে হেঁটেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ রাখা হয়েছে ছিল ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বাজেট হওয়ার কথা আছে। এ বাজেট সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ ৭৭ হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেক পদ এখনো খালি আছে। এতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো হলেও সরকারের ব্যয়ে বড় ধরনের চাপ বাড়বে না।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।