হালফ্যাশনের জার্সি
মোহসীনা লাইজু | ২২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
জার্সি ফেব্রিকস মোলায়েম। আগে উল থেকে তৈরি হতো এই ফেব্রিকস। এখন জার্সি তুলা, সুতি সুতার মিশ্রণ এবং সিনথেটিক ফাইবার থেকে তৈরি হয়। ফ্যাশনেবল ট্রেন্ডি পোশাক, গৃহস্থালির আইটেম এবং খেলোয়াড়ের পোশাক হিসেবে মূলত এই ফেব্রিকস জনপ্রিয়। লিখেছেন মোহসীনা লাইজু
মেয়েদের আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যের পোশাকের তালিকায় কয়েক বছর আগেও ভরসা ছিল সুতির টি-শার্ট আর টপস। তা ঘরে হোক বা বাইরে। তবে সে তালিকায় এখন যোগ হয়েছে জার্সি কাপড়ের পোশাক। দেখতে সুতি টি-শার্টের মতোই আর আরামদায়কও বটে। আবার সুতির মতো শুকাতে বেশি সময় লাগে না। নেই ধোয়ার পর ইস্ত্রি করার বাড়তি ঝামেলা। সব ধরনের ক্রেতার বাজেটের মধ্যেই থাকছে এর দাম। তাই তরুণদের পাশাপাশি তরুণীদের কাছেও দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে জার্সি কাপড়ের টি-শার্ট, টপস, প্যান্ট, ট্রাউজার ও জ্যাকেট। বাসায়, আড্ডায়, জগিংয়ে, হাঁটাহাঁটি, জিমনেসিয়াম ও খেলাধুলার সময় এমন পোশাক আরামদায়কও।
ইতিহাস
শুরুতে ছেলেদের সোয়েটার তৈরিতে এ ধরনের ফেব্রিকস ব্যবহার হতো। এর কারণ তারা যখন সমুদ্রে মাছ ধরতে যেত তখন দীর্ঘসময় একই পোশাকে তাদের থাকতে হতো। আর ভিজলেও যাতে তাড়াতাড়ি শুকায়। এতে গরম ও ঠান্ডা দুটোই কম অনুভূত হয়। ১৯১৬ সালে কোকো চ্যানেল জার্সি ফেব্রিকস উদ্ভাবন করেছিল। খুব দ্রুতই জনপ্রিয় ও চাহিদা তৈরি হয়েছিল এই ফেব্রিকস। শুরুতে জার্সি ফেব্রিকস মূলত পশম থেকে তৈরি হতো। তবে এখন অত্যাধুনিক পদ্ধতি যেমন সিনথেটিক ফাইবারের সুতা ব্যবহার করেও জার্সি তৈরি করা হয়। এর কারণ হলো ব্যয় কম এবং সিনথেটিক ফাইবার টেকসই। বর্তমানে বেশির ভাগ জার্সি সিনথেটিক ফাইবারের সঙ্গে সুতির মিশ্রণে তৈরি। এ ছাড়া তুলা এবং সিনথেটিক ফাইবার ছাড়াও সাধারণত প্রাকৃতিক তন্তু যেমন শণ, সিল্ক, বাঁশ, লিলেন, উল, নাইলন, রেয়ন ইত্যাদি থেকেও জার্সি তৈরি করা হয়। জার্সি তৈরিতে কখনো কখনো অতিরিক্ত স্থিতিস্থাপকতা দেওয়ার জন্য লাইক্রা ব্যবহার করা হয়।
ফ্যাশন ধারা
ডিজাইনারদের নিত্যনতুন ডিজাইন আর নতুন ধরনের প্যাটার্ন এবং রঙের কারণে ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে এ সময় দারুণ জনপ্রিয়। র্যাম্প মডেল মনোয়ারা জলি বলেন, ‘আমার পছন্দের তালিকায় অনেক দিন ধরেই জার্সি কাপড়ের শর্ট টি-শার্ট, ট্রাউজার আর জ্যাকেট। আমি বাইরে এ ধরনের পোশাক পরতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। বেশ আরামদায়ক, সহজেই মেনটেইন করা যায়। সঙ্গে ফ্যাশনটা ঠিক থাকে। দামও রিজনাবল বলা যায়।’ ফ্যাশন হাউজ নিত্য-উপহারের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার বাহার রহমান বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবি ডিজিটাল প্রিন্টের মাধ্যমে জার্সি কাপড়ের টি-শার্টে নকশা করেছি। জার্সি কাপড় এমনিতেই আরামদায়ক, সঙ্গে ফ্যাশনেবলও। এর সঙ্গে ডিজিটাল প্রিন্টিংয়ের প্রসার হওয়ায় তাতে নতুন নতুন নকশা খুব সহজেই ফুটিয়ে যায়। জার্সি কাপড়ের পোশাক খেলার মাঠে সীমাবদ্ধ নেই। মাঠের বাইরেও তরুণ-তরুণীরা পরছেন এমন ধরনের পোশাক।’
বিভিন্ন ডিজাইন ও নকশার জার্সি কাপড়ের টি-শার্ট, টপস, প্যান্ট , ট্রাউজার ও পলো নিয়ে এসেছে ফ্যাশন হাউজ সেইলর ও লারিভ। লারিভের স্বত্বাধিকারী মন্নুজান নার্গিস বলেন, ‘জার্সি কাপড় শুধু আরামদায়কই নয়, অন্যান্য কাপড়ের তুলনায় অনেক বেশি টেকসই। এ কারণে সহজে ছেঁড়ে না বা নষ্ট হয় না। ডিজিটাল প্রিন্টিংয়ের কারণে পছন্দের নকশা ফুটিয়ে তোলা যায়। ফলে টি-শার্ট ও ট্রাউজার প্যান্ট ও শীতের জ্যাকেট তরুণ-তরুণীদের কাছে সবচেয়ে প্রিয়।’
ভিনটেক্স টেক্সটাইলের চিফ ডিজাইনার দোদুল আহমেদ জানালেন, ‘জার্সি ফেব্রিকস দেশে জনপ্রিয় হওয়ার কারণে এর বাজার বিদেশের মতো আমাদের দেশেও বাড়ছে। বুননের ওপর নির্ভর করে দুই ধরনের জার্সি ফেব্রিকস রয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড জার্সি মূলত সরল বোনা বলা হয়। এটি সুচের একটি সেট ব্যবহার করে তৈরি করা হয় এবং একদিকে মসৃণ থাকে। আর ডাবল বোনা জার্সিতে ফেব্রিকসের দুটি স্তর একসঙ্গে বোনা হয়। একে ডাবল বোনা জার্সি বা ইন্টারলক জার্সি বলা হয়। জার্সির কাপড়ের পোশাক জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হলো স্ট্রেচি করা যায়, নরম ও মসৃণ। তাই পরার পর আরাম বোধ হয়। দ্রুতই শুকিয়ে যায়। জার্সিতে ভিসকোস বা সিল্ক ব্যবহার করলে জার্সি অন্য ফেব্রিকসের তুলনায় মসৃণ ও গর্জিয়াস হয়।’
জার্সি ফেব্রিকসের মধ্যে আবার অনেকগুলো ধরন আছে। সিঙ্গেল জার্সি সূক্ষ্ম সুতা দিয়ে তৈরি, যা সাধারণত মোজা তৈরিতে ব্যবহার হয়। জ্যাকেট জার্সি একাধিক ধরনের সুতা দিয়ে তৈরি । বুনন পদ্ধতিও একটু জটিল। ইন্টারসিয়া জার্সি বুনন প্রক্রিয়ার মধ্যেই নকশা ফুটিয়ে তুলতে হয়। এ ধরনের জার্সি ফেব্রিকস একটু ব্যয়বহুল। ক্লোক জার্সির ফেব্রিকসের বুনন প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। বুননে নানা ধরনের সুতা যেমন সিল্ক, উলেন বা রেশম সুতার সঙ্গে মিশিয়ে বোনা হয়। এই ধরনের জার্সি ফেব্রিকসের দামও একটু বেশি।
বনানীর ফিট স্টোরের স্বত্বাধিকারী মোমিনুল হক বলেন, তরুণদের কাছে জার্সি টি-শার্ট ও নানা ধরনের সেট বেশি জনপ্রিয়। এ ছাড়া একই ধরনের টপস ও ট্রাউজার সেট মেয়েরা পরছে। শীতের জন্য এর ওপরে শর্ট ও লং দুই ধরনের জ্যাকেটও বেছে নিচ্ছে। জার্সির পোলো, ইয়োগা সেট অনেকের পছন্দের তালিকায় আছে। মেয়েদের পছন্দের রং যেমন পার্পেল, বেবি পিঙ্ক ও হট রেড এবং ব্ল্যাক এসব রঙের সেটই সবাই কিনছে। চায়না ও ইউএস থেকে আমাদের পোশাক আনা হয়। চায়নার থেকে ইউএস এর পোশাকের দাম একটু বেশি। সব ধরনের ক্রেতাই বাজেট অনুযায়ী পোশাক কিনতে পারবেন। ’
দরদাম ও কোথায় পাবেন
জার্সি ফেব্রিকসের নানা ধরনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। ব্র্যান্ড ও নন-ব্যান্ড দুটোই পাবেন। এ ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডের জার্সি পোশাকের দামও বেশি। তবে দামি ব্র্যান্ডের রেপ্লিকা পোশাকও কিনতে পারবেন। দাম কম। নগরীর ফুটপাত থেকে জনপ্রিয় শপিং মলের পোশাকের দোকানে এ ধরনের পোশাক পাবেন। দেশীয় ফ্যাশন হাউজ সেইলর, লারিভ, নিত্য-উপহার, এক্সট্যাসি, ফিট স্টোর, স্পোর্টস ওয়ার্ল্ড ও বুমে এ ধরনের পোশাক পাবেন। অনলাইন থেকেও এ ধরনের পোশাক কিনতে পারবেন। মেয়েদের জার্সি টি-শার্ট পাবেন ৩৩০ থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে। টপস ট্রাউজার ও ইয়োগা সেট পাবেন ১২০০ থেকে ৩০০০ টাকা। ফিটনেস স্পোর্টস প্যান্ট পাবেন ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায়। শর্ট জ্যাকেট ৬০০ থেকে ১৫০০ আর লং জ্যাকেট ১০০০ থেকে ২৫০০ টাকায়। জার্সির পোশাক মূলত ফেব্রিকস ও ব্র্যান্ডের ওপর নির্ভর করে। তবে দেশীয় ফ্যাশন হাউজ ও চায়না থেকে আমদানি করা জার্সি পোশাক এই দামে কিনতে পারবেন।
শেয়ার করুন
মোহসীনা লাইজু | ২২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

জার্সি ফেব্রিকস মোলায়েম। আগে উল থেকে তৈরি হতো এই ফেব্রিকস। এখন জার্সি তুলা, সুতি সুতার মিশ্রণ এবং সিনথেটিক ফাইবার থেকে তৈরি হয়। ফ্যাশনেবল ট্রেন্ডি পোশাক, গৃহস্থালির আইটেম এবং খেলোয়াড়ের পোশাক হিসেবে মূলত এই ফেব্রিকস জনপ্রিয়। লিখেছেন মোহসীনা লাইজু
মেয়েদের আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যের পোশাকের তালিকায় কয়েক বছর আগেও ভরসা ছিল সুতির টি-শার্ট আর টপস। তা ঘরে হোক বা বাইরে। তবে সে তালিকায় এখন যোগ হয়েছে জার্সি কাপড়ের পোশাক। দেখতে সুতি টি-শার্টের মতোই আর আরামদায়কও বটে। আবার সুতির মতো শুকাতে বেশি সময় লাগে না। নেই ধোয়ার পর ইস্ত্রি করার বাড়তি ঝামেলা। সব ধরনের ক্রেতার বাজেটের মধ্যেই থাকছে এর দাম। তাই তরুণদের পাশাপাশি তরুণীদের কাছেও দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে জার্সি কাপড়ের টি-শার্ট, টপস, প্যান্ট, ট্রাউজার ও জ্যাকেট। বাসায়, আড্ডায়, জগিংয়ে, হাঁটাহাঁটি, জিমনেসিয়াম ও খেলাধুলার সময় এমন পোশাক আরামদায়কও।
ইতিহাস
শুরুতে ছেলেদের সোয়েটার তৈরিতে এ ধরনের ফেব্রিকস ব্যবহার হতো। এর কারণ তারা যখন সমুদ্রে মাছ ধরতে যেত তখন দীর্ঘসময় একই পোশাকে তাদের থাকতে হতো। আর ভিজলেও যাতে তাড়াতাড়ি শুকায়। এতে গরম ও ঠান্ডা দুটোই কম অনুভূত হয়। ১৯১৬ সালে কোকো চ্যানেল জার্সি ফেব্রিকস উদ্ভাবন করেছিল। খুব দ্রুতই জনপ্রিয় ও চাহিদা তৈরি হয়েছিল এই ফেব্রিকস। শুরুতে জার্সি ফেব্রিকস মূলত পশম থেকে তৈরি হতো। তবে এখন অত্যাধুনিক পদ্ধতি যেমন সিনথেটিক ফাইবারের সুতা ব্যবহার করেও জার্সি তৈরি করা হয়। এর কারণ হলো ব্যয় কম এবং সিনথেটিক ফাইবার টেকসই। বর্তমানে বেশির ভাগ জার্সি সিনথেটিক ফাইবারের সঙ্গে সুতির মিশ্রণে তৈরি। এ ছাড়া তুলা এবং সিনথেটিক ফাইবার ছাড়াও সাধারণত প্রাকৃতিক তন্তু যেমন শণ, সিল্ক, বাঁশ, লিলেন, উল, নাইলন, রেয়ন ইত্যাদি থেকেও জার্সি তৈরি করা হয়। জার্সি তৈরিতে কখনো কখনো অতিরিক্ত স্থিতিস্থাপকতা দেওয়ার জন্য লাইক্রা ব্যবহার করা হয়।
ফ্যাশন ধারা
ডিজাইনারদের নিত্যনতুন ডিজাইন আর নতুন ধরনের প্যাটার্ন এবং রঙের কারণে ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে এ সময় দারুণ জনপ্রিয়। র্যাম্প মডেল মনোয়ারা জলি বলেন, ‘আমার পছন্দের তালিকায় অনেক দিন ধরেই জার্সি কাপড়ের শর্ট টি-শার্ট, ট্রাউজার আর জ্যাকেট। আমি বাইরে এ ধরনের পোশাক পরতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। বেশ আরামদায়ক, সহজেই মেনটেইন করা যায়। সঙ্গে ফ্যাশনটা ঠিক থাকে। দামও রিজনাবল বলা যায়।’ ফ্যাশন হাউজ নিত্য-উপহারের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার বাহার রহমান বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবি ডিজিটাল প্রিন্টের মাধ্যমে জার্সি কাপড়ের টি-শার্টে নকশা করেছি। জার্সি কাপড় এমনিতেই আরামদায়ক, সঙ্গে ফ্যাশনেবলও। এর সঙ্গে ডিজিটাল প্রিন্টিংয়ের প্রসার হওয়ায় তাতে নতুন নতুন নকশা খুব সহজেই ফুটিয়ে যায়। জার্সি কাপড়ের পোশাক খেলার মাঠে সীমাবদ্ধ নেই। মাঠের বাইরেও তরুণ-তরুণীরা পরছেন এমন ধরনের পোশাক।’
বিভিন্ন ডিজাইন ও নকশার জার্সি কাপড়ের টি-শার্ট, টপস, প্যান্ট , ট্রাউজার ও পলো নিয়ে এসেছে ফ্যাশন হাউজ সেইলর ও লারিভ। লারিভের স্বত্বাধিকারী মন্নুজান নার্গিস বলেন, ‘জার্সি কাপড় শুধু আরামদায়কই নয়, অন্যান্য কাপড়ের তুলনায় অনেক বেশি টেকসই। এ কারণে সহজে ছেঁড়ে না বা নষ্ট হয় না। ডিজিটাল প্রিন্টিংয়ের কারণে পছন্দের নকশা ফুটিয়ে তোলা যায়। ফলে টি-শার্ট ও ট্রাউজার প্যান্ট ও শীতের জ্যাকেট তরুণ-তরুণীদের কাছে সবচেয়ে প্রিয়।’
ভিনটেক্স টেক্সটাইলের চিফ ডিজাইনার দোদুল আহমেদ জানালেন, ‘জার্সি ফেব্রিকস দেশে জনপ্রিয় হওয়ার কারণে এর বাজার বিদেশের মতো আমাদের দেশেও বাড়ছে। বুননের ওপর নির্ভর করে দুই ধরনের জার্সি ফেব্রিকস রয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড জার্সি মূলত সরল বোনা বলা হয়। এটি সুচের একটি সেট ব্যবহার করে তৈরি করা হয় এবং একদিকে মসৃণ থাকে। আর ডাবল বোনা জার্সিতে ফেব্রিকসের দুটি স্তর একসঙ্গে বোনা হয়। একে ডাবল বোনা জার্সি বা ইন্টারলক জার্সি বলা হয়। জার্সির কাপড়ের পোশাক জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হলো স্ট্রেচি করা যায়, নরম ও মসৃণ। তাই পরার পর আরাম বোধ হয়। দ্রুতই শুকিয়ে যায়। জার্সিতে ভিসকোস বা সিল্ক ব্যবহার করলে জার্সি অন্য ফেব্রিকসের তুলনায় মসৃণ ও গর্জিয়াস হয়।’
জার্সি ফেব্রিকসের মধ্যে আবার অনেকগুলো ধরন আছে। সিঙ্গেল জার্সি সূক্ষ্ম সুতা দিয়ে তৈরি, যা সাধারণত মোজা তৈরিতে ব্যবহার হয়। জ্যাকেট জার্সি একাধিক ধরনের সুতা দিয়ে তৈরি । বুনন পদ্ধতিও একটু জটিল। ইন্টারসিয়া জার্সি বুনন প্রক্রিয়ার মধ্যেই নকশা ফুটিয়ে তুলতে হয়। এ ধরনের জার্সি ফেব্রিকস একটু ব্যয়বহুল। ক্লোক জার্সির ফেব্রিকসের বুনন প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। বুননে নানা ধরনের সুতা যেমন সিল্ক, উলেন বা রেশম সুতার সঙ্গে মিশিয়ে বোনা হয়। এই ধরনের জার্সি ফেব্রিকসের দামও একটু বেশি।
বনানীর ফিট স্টোরের স্বত্বাধিকারী মোমিনুল হক বলেন, তরুণদের কাছে জার্সি টি-শার্ট ও নানা ধরনের সেট বেশি জনপ্রিয়। এ ছাড়া একই ধরনের টপস ও ট্রাউজার সেট মেয়েরা পরছে। শীতের জন্য এর ওপরে শর্ট ও লং দুই ধরনের জ্যাকেটও বেছে নিচ্ছে। জার্সির পোলো, ইয়োগা সেট অনেকের পছন্দের তালিকায় আছে। মেয়েদের পছন্দের রং যেমন পার্পেল, বেবি পিঙ্ক ও হট রেড এবং ব্ল্যাক এসব রঙের সেটই সবাই কিনছে। চায়না ও ইউএস থেকে আমাদের পোশাক আনা হয়। চায়নার থেকে ইউএস এর পোশাকের দাম একটু বেশি। সব ধরনের ক্রেতাই বাজেট অনুযায়ী পোশাক কিনতে পারবেন। ’
দরদাম ও কোথায় পাবেন
জার্সি ফেব্রিকসের নানা ধরনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। ব্র্যান্ড ও নন-ব্যান্ড দুটোই পাবেন। এ ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডের জার্সি পোশাকের দামও বেশি। তবে দামি ব্র্যান্ডের রেপ্লিকা পোশাকও কিনতে পারবেন। দাম কম। নগরীর ফুটপাত থেকে জনপ্রিয় শপিং মলের পোশাকের দোকানে এ ধরনের পোশাক পাবেন। দেশীয় ফ্যাশন হাউজ সেইলর, লারিভ, নিত্য-উপহার, এক্সট্যাসি, ফিট স্টোর, স্পোর্টস ওয়ার্ল্ড ও বুমে এ ধরনের পোশাক পাবেন। অনলাইন থেকেও এ ধরনের পোশাক কিনতে পারবেন। মেয়েদের জার্সি টি-শার্ট পাবেন ৩৩০ থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে। টপস ট্রাউজার ও ইয়োগা সেট পাবেন ১২০০ থেকে ৩০০০ টাকা। ফিটনেস স্পোর্টস প্যান্ট পাবেন ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায়। শর্ট জ্যাকেট ৬০০ থেকে ১৫০০ আর লং জ্যাকেট ১০০০ থেকে ২৫০০ টাকায়। জার্সির পোশাক মূলত ফেব্রিকস ও ব্র্যান্ডের ওপর নির্ভর করে। তবে দেশীয় ফ্যাশন হাউজ ও চায়না থেকে আমদানি করা জার্সি পোশাক এই দামে কিনতে পারবেন।