ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী অরিত্রী অধিকারী আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনাকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
বুধবার রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (পূর্ব) খন্দকার নূরুন্নবী।
তিনি জানান, হাসনা হেনাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে হাজির করা হয়েছে। এছাড়া মামলার অপর দুই আসামি ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ ফেরদৌস নাজনীন ও শাখা প্রধান জিনাত আখতারকে গ্রেফতারের প্রস্তুতি চলছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, অধ্যক্ষ ফেরদৌস নাজনীন ও প্রভাতি শাখা প্রধান জিনাত আখতার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আত্মসমর্পণ করবেন বলেই তাদের বিশ্বাস। যদিও তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্ত কমর্কর্তারা।
পুলিশ কর্মকর্তা খন্দকার নূরুন্নবী বলেন, মামলার আসামি বিবেচনায় তাদের গ্রেফতার করার প্রস্তুতি নিয়ে পুলিশ এগোচ্ছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালে অরিত্রীর কাছে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এ জন্য অরিত্রী নকল করেছে বলে তাকে অভিযুক্ত করা হয়। এ ঘটনায় বাবা-মাকে ডেকে এনে অরিত্রীকে টিসি (স্কুল থেকে দেওয়া ছাড়পত্র) দিয়ে দেবে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়।
এ ঘটনার পরপর সোমবার দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগর নিজ বাসায় চলে যায় অরিত্রী। বাবা-মা ফিরে এসে তাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষের অপসারণ, গভর্নিং বডি পরিবর্তনসহ ছয় দফা দাবিতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে মঙ্গলবার থেকে বিক্ষোভ করছেন ছাত্রী-অভিভাবকরা।
প্রথম দিনই বেইলি রোডের ক্যাম্পাসে গিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
তদন্ত কমিটি বুধবার তাদের প্রতিবেদনে অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষিকাকে অরিত্রী অধিকারীর অত্মহত্যার প্ররোচনায় অভিযুক্ত করে তাদের বরখাস্তসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়। অপর দুই অভিযুক্ত শিক্ষিকা জিনাত আকতার ও হাসনা হেনা। অবশ্য এ ঘটনায় স্কুলের সিনিয়র মর্নিং শিফটের প্রধান শিক্ষক জিনাত আকতারকে মঙ্গলবারই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এছাড়া বুধবার সব ক্লাস ও পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ।