স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে চলে আসা সৃষ্ট বিরোধে আবারও মুখোমুখি আওয়ামী লীগের দু’পক্ষ। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের প্রতিপক্ষ সমর্থকদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও ফসল বিনষ্টের ঘটনা ঘটিয়েছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ইউনিয়নের উজানগ্রাম, গজনবীপুর, সোনাইডাঙ্গা, বিত্তিপাড়া ও মাধবপুর গ্রামের সাধারণ বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে গ্রাম ছেড়ে নিরাপদে পালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতা কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল মজিদ গ্রুপের সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক গ্রুপের বিরোধ চলে আসছিল।
তার জের ধরেই পক্ষগণের মধ্যে এই হামলা-পাল্টা হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ, বিনষ্ট হচ্ছে মাঠের ফসল। এলকায় বর্তমানে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব নেই, সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় বিভিন্ন পদে আছেন, অথচ তাদের বিরোধের জেরে জানমালের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ, এমন অভিযোগ করে পরিস্থিতি অবসানের দাবি এলাকাবাসীর।
ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ রতন শেখ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সংবাদ পেয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে একপক্ষের নেতৃত্ব পর্যায়ের আবু বক্করসহ উভয়পক্ষের ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ সময় তল্লাশি চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের পূর্বক আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপরপক্ষের নেতৃত্বদানকারী আব্দুল মজিদকেও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে দাবি ওসির।
উল্লেখ্য, গত ৬ জানুয়ারি নির্বাচনী সহিংসতার জের ধরে পার্শ্ববর্তী আব্দালপুর ইউনিয়নে একইভাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম মোস্তফা ও ইউপি চেয়ারম্যান আলী হায়দারের সমর্থক দু’পক্ষের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা হয়।
ওই ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান আলী হায়দারের সমর্থক ও ইবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিমের বাবা মঈনুদ্দিন বিশ্বাস (৫৮) নিহত হন। এর রেশ কাটতে না কাটতেই আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ নতুন করে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রক্তাক্ত জনপদ খ্যাত কুষ্টিয়ার এই অঞ্চলটিতে সন্ত্রাস আতঙ্কে এক সময় মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারত না। আমরা সেখানে দলীয় শৃঙ্খলায় এনে চেষ্টা করছি কিভাবে এর অবসান ঘটানো যায়। আতঙ্ক সৃষ্টিকারী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এটাই স্বাভাবিক। সেখানে দলীয় বিবেচনা মুখ্য বিষয় নয়।