ভারত ও পাকিস্তানের আসল লড়াইয়ের চেয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে গেলে বেশি উত্তপ্ত। যুদ্ধবাজ অ্যাক্টিভিস্টরা এক্ষেত্রে কয়েক ধাপ এগিয়ে। তারা যুদ্ধ-বিরোধীদের তোপ দাগাচ্ছে দেশবিরোধী হিসেবে।
তবে এসব ফেসবুক যুদ্ধবাজদের ‘চরম লজ্জাই’ দিলেন ভারতীয় বিমান বাহিনীর নিহত স্কোয়াড্রন লিডার নিনাদ মন্ধবগানের স্ত্রী বিজেতা।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমান বাহিনীর এমআই-১৭ কপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছিল অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের বদগামের গারেন্দ কালানে। ওই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন ছয় বিমান সেনা অফিসার। তাদের একজন স্কোয়াড্রন লিডার নিনাদ মন্ধগানে। অবশ্য পাকিস্তান এই কপ্টারটি ভূপাতিত করার দাবি করেছে।
আনন্দবাজার জানায়, শুক্রবার মহারাষ্ট্রের নাসিকে স্কোয়াড্রন লিডার নিনাদ মন্ধবগানের কফিনবন্দী দেহটা এসে পৌঁছে। তেরঙা জড়ানো স্বামীর কফিনটা জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন বিজেতা। শেষবারের মতো বাবার কফিনে চুমু খেল দু’বছরের নিয়া।
শুক্রবারই নাসিকে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় নিনাদের। স্বামীর শেষকৃত্য সেরে সোশ্যাল মিডিয়ার ‘যুদ্ধবাজদের’ উদ্দেশে বিজেতা বলেন, “যুদ্ধ যদি করতেই হয় সোশ্যাল মিডিয়ায় আওয়াজ না তুলে আসল যুদ্ধক্ষেত্রে যান। তবেই বুঝতে পারবেন যুদ্ধ কতটা ভয়ঙ্কর!”
তিনি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়া, টিভিতে অনেক কিছুই ঘটছে। অনেক সময় মিডিয়াও দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো কাজ করছে। আমরা যুদ্ধ চাই না। যুদ্ধের পরিণতি কী তা আপনারা জানেন না। আরও নিনাদের মৃত্যু হোক আমরা চাই না।”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ‘যুদ্ধবাজদের’ উদ্দেশে তিনি বিজেতা বলেন, “বন্ধ করুন এসব। যুদ্ধ যদি করতেই চান, তা হলে ভার্চুয়াল যুদ্ধক্ষেত্রে না থেকে আসল যুদ্ধক্ষেত্রে যান।”
কয়েকটি পরামর্শ দিয়ে নিহত সেনার স্ত্রী বলেন, “যদি সত্যিই পরিবর্তন চান, যুদ্ধের জিগির না তুলে দেশের পরিবর্তনের দিকে মনোনিবেশ করুন। তাও যদি না পারেন, হয় নিজে সেনাবাহিনীতে যান, না হলে পরিবারের কাউকে পাঠান।”
তিনি আরও বলেন, “এটাও যদি না করতে পারেন তা হলে অন্তত নিজের আশপাশটা পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। খোলা জায়গায় মূত্রত্যাগ বন্ধ করুন, মহিলাদের হেনস্তা করা বন্ধ করুন।”