আলোচিত মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রম থেকে উদ্ধার হওয়া মো. সেলিম মিয়া (৪৫) এর দুটি কিডনিই অক্ষত রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। শনিবার (১১ মে) বিকেলে সেলিমকে ময়মনসিংহ নিয়ে যান তার পরিবার। পরে শনিবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের প্রান্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর রাতে রিপোর্ট দেখেন মেডিসিন ও কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সৈয়দ হাসানুল ইসলাম আকাশ।
এ ব্যাপারে ডা. আকাশ বলেন, শরীরে দুইটি কিডনিই অক্ষত রয়েছে। শরীরের যে জায়গাটিতে কাটা-ছেঁড়ার দাগ রয়েছে সেই জায়গা দিয়েই সাধারণত অস্ত্রোপচার করা হয়। সেজন্য মূলত সন্দেহ তৈরি হয়েছিল।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মানসিক ভারসাম্যহীন মো. সেলিম মিয়াকে মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার থেকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে গত বুধবার তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনরা। আহত সেলিম উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের বৃপাচাশী গ্রামের দরিদ্র হাসিম উদ্দিনের ছেলে।
পরিবার জানিয়েছে, উদ্ধারের পর সেলিমের পেটে কাটাছেঁড়ার দাগ পাওয়া গিয়েছিল। যে কারণে তাদের সন্দেহ হয়েছিল মিল্টন সমাদ্দার সেলিমের অঙ্গ খুলে নিয়েছে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য তারা চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসক কিডনি অক্ষত আছে বলে তাদেরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সেলিমের পরিবার আরও জানায়, বিগত ১৪ বছর ধরে সেলিম মানসিক ভারসাম্যহীন। প্রায় ছয় মাস আগে মানসিক ভারসাম্যহীন সেলিম বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পায়নি। এরই মধ্যে ঢাকার মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়। সেলিমের পরিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে তার ছবি দেখতে পান। তারপর গত মঙ্গলবার সেলিমের মা রাবিয়া খাতুন ও চাচাতো ভাই গ্রাম পুলিশ আব্দুর রশিদ সেলিমের সন্ধানে ঢাকা চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে গিয়ে তাকে শনাক্ত করেন। পরে বুধবার পুলিশের সহায়তায় সেলিমকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে আজ (১১ মে) তার পরিবার সেলিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ নিয়ে যান।
বড়হিত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আজিজুল হক ভূঞা মিলন বলেন, 'এমন একটি খবর শুনে অসুস্থ সেলিমকে দেখতে তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। পরিবারকে বলে এসেছি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, এমন একটি খবর পেয়ে বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। সেই সাথে পরিবারের লোকজনকে তার চিকিৎসা ও কিছু পরীক্ষার করার জন্য বলে দেওয়া হয়েছিল। জানতে পারলাম চিকিৎসক তার কিডনি অক্ষত আছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।