বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

অস্ত্রহাতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা, চোখে পড়েনি প্রক্টরের

আপডেট : ১৪ মে ২০২৪, ০৭:০২ পিএম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে গতকাল সোমবার সভাপতি-সম্পাদক পক্ষের মধ্যে ফের উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় তারা রড, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রসহ মাদার বখ্শ হলের সামনে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে তাদের সামনে দিয়ে সোহরাওয়ার্দী হলে প্রবেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকসহ প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা। তবে এসময় ছাত্রলীগের হাতে কোনো অস্ত্র দেখেননি বলে মন্তব্য করেছেন প্রক্টর।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টা থেকে পৌঁনে ৫টা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী হলে তল্লাসি চালানোর পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ ও জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রণব কুমার পান্ডে।

অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে থাকা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘আপনার চোখে হয়তো পড়েছে। কিন্তু আমি যখন ঢুকলাম তখন আমার চোখে সেটি পড়েনি। আমি খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। যাতে আমার ছাত্রদের কোনো ক্ষতি না হয়। আমরা তাদেরকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।’

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে অস্ত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তারা রামদা হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেটা হয়তো আপনি দেখছেন, আরেকজন দেখছেন। কিন্তু আমি যখন গিয়েছি তখন হয়তো তারা লুকিয়ে ফেলেছে। তবে আমরা এসব বিষয়ে অবগত আছি। আর যাদের মাধ্যমে এগুলো উদ্ধার করা যায় আমরা তাদেরকে বলেছি। এখানে পুলিশ প্রশাসনেরও একটা দায়িত্ব আছে।’

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ মোবারককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে ঘটনার শুরুর দিন মতিহার থানার উপ-পুলিশ কমিশনার মধুসূদন রায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় স্পর্শকাতর একটি জায়গা। এখানে পুলিশ চাইলেই হস্তক্ষেপ করতে পারে না।’

ছাত্রলীগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ অন্তত ১২ জন অনুসারী নিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে প্রবেশ করেন। এ সময় হল গেটে ওই হলের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান আতিকের সঙ্গে নিয়াজের দেখা হয়। এক পর্যায়ে নিয়াজ তাকে মারধর ও হত্যার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন আতিক। তবে হত্যার হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেন নিয়াজ।  

খবরটি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারীরা জড়ো হতে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য হল থেকেও নেতা-কর্মীরা সেখানে যোগ দেন। এ সময় নেতা-কর্মীদের হাতে রামদা, রড, দেশীয় অস্ত্রসহ ইটপাটকেল দেখা গেছে। 

খবর পেয়ে রাত আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক প্রণব কুমার পান্ডে, সোহরাওয়ার্দী হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেনসহ প্রমুখ। 

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত