দীর্ঘ ২০ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী পদে ক্ষমতায় থাকার পর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দ্বীপরাষ্ট্র সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং। এতে করে দেশটিতে একটি রাজনৈতিক যুগের অবসান ঘটতে যাচ্ছে।
আজ বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে সিঙ্গাপুরের উপ–প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী লরেন্স ওংয়ের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন লুং। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন এই পরিবর্তনের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের রাজনৈতিক নেতৃত্বে একটি বিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে দেশটির রাজনীতি লি পরিবারের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসার ধারণা করছেন অনেকে। যদিও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও মন্ত্রিসভায় একজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী হিসেবে থেকে যাবেন লি সিয়েন লুং।
গত সপ্তাহে স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেওয়া সর্বশেষ সাক্ষাৎকারে লি সিয়েন লুং বলেন, ‘আমি অন্যদের চেয়ে দ্রুত দৌড়ানোর চেষ্টা করিনি। আমি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সিঙ্গাপুরকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি মনে করি, এ যাত্রায় আমার কিছু সাফল্য রয়েছে। আমি আমার বাবা কিংবা আগের প্রধানমন্ত্রী গোহ চোক টংয়ের চেয়ে একটু ভিন্নভাবে চলার চেষ্টা করেছি।’
১৯৬৫ সালে স্বাধীন হয় দ্বীপরাষ্ট্র সিঙ্গাপুর। এরপর দেশটিতে তিনজন প্রধানমন্ত্রী শাসন করেছেন। তিনজনই ছিলেন পিপলস অ্যাকশন পার্টির (পিএপি) নেতা।
সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর নাম লি কুয়ান ইয়ু। তিনি ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লির বাবা। তাঁরে আধুনিক সিঙ্গাপুরের রূপকার বলা হয়। লি কুয়ান ইয়ু দীর্ঘ ২৫ বছর সিঙ্গাপুর শাসন করেছিলেন।
বাবা ক্ষমতায় থাকাকালীন ১৯৮৪ সালে প্রথম রাজনীতিতে যোগদান করেন লি সিয়েন লুং। কিন্তু তার রাজনৈতিক জীবনের প্রথম বছরগুলোই সমালোচনার স্বীকার হয়েছিল।
লির পরিবারের বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। সমালোচকেরা বলেন, তাঁরা সিঙ্গাপুরে রাজবংশ তৈরি করে ফেলেছেন। এখন লির পদত্যাগের ঘোষণাকে সিঙ্গাপুরের রাজনীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।