ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলে যৌথভাবে পরিচালিত একটি ‘গুপ্তচর চক্র’ বা স্পাই সেল আটকের দাবি জানিয়েছে ইরান সমর্থিত হুতি বাহিনী। আটককৃত চক্রটিতে ইয়েমেনে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের সাবেক কর্মচারিও জড়িত রয়েছে বলে দাবি জানিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি।
গতকাল সোমবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে এ দাবি করেন গোষ্ঠীটির ইন্টেলিজেন্স প্রধান মেজর জেনারেল আব্দুল হাকিম আল-হাশেম। লেবাননের সম্প্রচারমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
টেলিভিশন ভাষণে মেজর জেনারেল হাশেম বলেন, ‘শত্রুদের পক্ষ নিয়ে মার্কিন-ইসরায়েলি গুপ্তচরেরা কয়েক দশক ধরে ইয়েমেনের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুপ্তচরবৃত্তি ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অতীতে গুপ্তচর চক্রের সদস্যরা ও মার্কিন দূতাবাসের কর্মচারীরা তাঁদের অবস্থানের অপব্যবহার করে নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সানা থেকে তাদের দূতাবাস প্রত্যাহার করার পর এ চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের সংস্থার আড়ালে এসব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছিলেন।’
হুতিদের এ দাবির বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি ইসরায়েলি সরকারি কর্মকর্তারা। এছাড়া এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জাতিসংঘ। এমনকি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও তাৎক্ষণিকভাবে রয়টার্সের অনুরোধের জবাব দেয়নি।
তবে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানিয়েছে যে, তারা ইয়েমেনে আটক ১১ কর্মীদের মুক্তির জন্য কাজ করছে যারা জাতিসংঘের পাঁচটি বিভিন্ন সংস্থা এবং ইয়েমেনের হয়ে জাতিসংঘের দূতের কাজ করত।
ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের তিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ধারাবাহিক অভিযানে সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতির গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত গণতন্ত্রপন্থী গ্রুপ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের তিন কর্মচারী এবং স্থানীয় মানবাধিকার গোষ্ঠীর তিন কর্মচারীকে আটক করেছে গত শুক্রবার।
হুতি নিয়ন্ত্রিত আল-মাসিরাহ টিভি টেলিগ্রামে তাদের চ্যানেলে বিভিন্ন কর্মীদের স্বীকারোক্তির একাধিক ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেসব ভিডিওতে হুতিদের হাতে আটক কয়েকজন তাঁদের গুপ্তচরবৃত্তির বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তবে রয়টার্স ভিডিওগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
রয়টার্স জানায়, গত তিন বছর ধরে সানায় মার্কিন দূতাবাসের প্রায় ২০ ইয়েমেনি কর্মচারীকে আটকে রেখেছে হুতি গোষ্ঠী। ২০১৪ সালে মার্কিন দূতাবাস ইয়েমেনে কার্যক্রম স্থগিত করে।