শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

চুক্তি ছাড়া তিস্তা মহাপরিকল্পনা কাজে আসবে না

আপডেট : ২৪ জুন ২০২৪, ০৭:২১ পিএম

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর অন্যতম তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি বহুদিন ধরেই ঝুলে আছে। সম্প্রতি দু’দিনের সফরে ভারতে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার দীর্ঘ বৈঠক হয়।

কিন্তু এবারও তিস্তা চুক্তি নিয়ে কোনো সুরাহা হয়নি; বরং ভারত তিস্তার পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে বাংলাদেশের মহাপরিকল্পনার বিষয়ে আগ্রহী বেশি। এ বিষয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ আলোচনা করে আসছিল।

গত শনিবার দিল্লিতে দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক শেষে নরেন্দ্র মোদি জানান, পানিবণ্টন চুক্তি নয়, তিস্তার পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় একটি মহাপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে শিগগিরই বাংলাদেশ যাবে ভারতের একটি কারিগরি দল।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশের এমন মহাপরিকল্পনার মধ্য দিয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়ল কাঙ্ক্ষিত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি। আর চুক্তি ছাড়া বাংলাদেশের এই মহাপরিকল্পনা কোনো কাজে আসবে না। পাশাপাশি তারা বলেন, বাংলাদেশের মহাপরিকল্পনায় ভারতের আগ্রহ থাকলেও দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক আরও দৃঢ় রাখতে এ চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন করাই ভালো। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে ভাঙন থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। কিন্তু খরার সময় পানি না পেলে এই অঞ্চলে বিপর্যয় নেমে আসবে।

এ ব্যাপারে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, পানির ব্যাপারে রাজনৈতিক মহল খুব একটা সোচ্চার নয়। আমাদের রাজনীতিক ভারতের কাছে কাঁচা মরিচের জন্য আবেদন করেন, পেঁয়াজের জন্য আবেদন করেন, কিন্তু তাদের পানির জন্য সোচ্চার হতে দেখি না। পানির জন্য আবেদন করেন কী?’

আইনুন নিশাত বলেন, ‘তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি থেকে পুরোপুরি সরে এসে এবার মহাপরিকল্পনার দিকে এগোচ্ছে ভারত।’ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ১৫ বছরের সেই সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। নতুন সরকার গঠন করা দুই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের কল্যাণে টেকসই সহযোগিতায় ঐকমত্যের কথা বলা হয়েছে। তাই মনে করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে দুই দেশের এই সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাবে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষক হুমায়ুন কবীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পানিবণ্টন চুক্তির বিকল্প কখনো মহাপরিকল্পনা হতে পারে না। আর নতুন করে ডিজিটাল ইস্যু, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল যুক্ত হয়েছে। রেল ট্রানজিট। বাংলাদেশর ভূখন্ড ব্যবহার করে ট্রানজিট সুবিধার বিষয়টিও বিগত কয়েক বছরের। কানেক্টিভিটি বাড়ার ফলে অবশ্যই দুই দেশ সমানভাবে উপকৃত হবে। বাংলাদেশও তাদের ন্যায্য হিস্যার বিষয় মাথায় রেখেই প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসস্পর্ক বজায় রাখবে।’

দুই দেশের মধ্যকার অমীমাংসিত ইস্যু, বিশেষ করে অভিন্ন নদীর পানি সমস্যা, সীমান্ত হত্যাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সমাধানের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে নতুন নতুন চুক্তি হয়েছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত