মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

মেসির কান্না মেসির হাসি

আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম

ফাইনালের সময় তখন ৩৫ মিনিটে গড়িয়েছিল। বক্সের মধ্যে ড্রিবল করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন মেসি। ক্রস করতে যাচ্ছিলেন, এমন সময় নিজেই পড়ে গেলেন। প্রতিপক্ষের ফুটবলারের পায়ের আঘাতও লাগে তার পায়ে। মাঠেই চলে তার চিকিৎসা। তারপর সুস্থ হয়ে খেলা শুরুও করলেন, কিন্তু বিরতির পর আরও একবার পায়ে আঘাত পান। তারপর আর টিকতে পারলেন না মাঠে।

প্রথমার্ধে মেসি প্রথমে পায়ে আঘাত পান

৬৬ মিনিটে তাকে উঠিয়ে নেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। আর তখনই চোখ দিয়ে ঝরে তার জল। বেঞ্চে বসে তিনি কান্নাটাও আড়াল হয়নি। মুহূর্তের মধ্যেই সেই কান্না ভাইরাল হয়ে যায়। তবে ম্যাচ শেষে যখন আর্জেন্টিনা মেতে উঠে শিরোপা উৎসবে, ততক্ষণে তার কান্না মিলিয়ে রূপ নেয় আনন্দের হাসিতে।

তবে মেসিকে সাধারণত কাঁদতে দেখা যায় না। ২০১১ ও ২০১৬ সালেও যখন কোপা আমেরিকার শিরোপার খুব কাছেও গিয়েও ব্যর্থ হয়েছিল, সেদিনও তিনি কাঁদেননি। ২০১৬ সালে চিলির বিপক্ষে পেনাল্টি মিসের পর চোখেমুখে হতাশা ছিল। নিজেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তিনি। সতীর্থদের থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা না পাওয়া গোলকিপারের ব্যর্থতায় মেসির আন্তর্জাতিক ট্রফি জয়ের স্বপ্ন সেবারও স্বপ্নই থেকে যায়।

চোটে ফুলে গেছে মেসির পা।

২০১৬-এর সেই ফাইনাল ম্যাচটি নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে গোলশূন্য ছিল। পরে টাইব্রেকারে ৪-২ এ জিতে নেয় চিলি। মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে টাইব্রেকারে প্রথম শটটি নিতে গিয়ে উড়িয়ে মেরেছিলেন বারের ওপর দিয়ে। ম্যাচটি হারের পর হতাশায় জার্সি দিয়ে মুখ ঢাকেন মেসি। কাঁদলেনও। আর্জেন্টাইনরা আরেকটি ফাইনাল হারের দুঃখ কী সইবেন এরই মধ্যে এলো ঘোষণা। মেসি বলেন, ‘আমার জাতীয় দলের হয়ে খেলার অধ্যায় শেষ!’

পরে মেসি অবসর ভেঙে ফিরেছেন আর্জেন্টিনা দলে, দলকে তুলেছেন ২০১৮ বিশ্বকাপের মূল পর্বে। সেবার না হলেও ২০২১-এ কোপা আমেরিকা এবং ২০২২-এ ফিনালিসসিমা ও কাতারে বিশ্বকাপ জয় মেসিকে দিয়েছে ফুটবল ক্যারিয়ারে পূর্ণতা। আর্জেন্টিনা ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে জিতেছে বিশ্বকাপ।

তাই মেসির জীবনে অপূর্ণতার কিছুই ছিল না। তবুও কেন এবার মেসি মাঠ ছাড়ার সময় কাঁদছিলেন? কারণটা জানা যাবে তার পরবর্তী কোনো সাক্ষাৎকারে। কিন্তু এটুকু স্পষ্ট, ডি মারিয়ার বিদায়টা রাঙানোর জন্যই খেলছিলেন মেসি ও তার সতীর্থরা। বিদায়ে সময় তার অবচেতন মনে হয়তো জেগে উঠেছিল, তার মাঠ ছাড়া মানে শক্তিশালি কলম্বিয়ার বিপক্ষে পরাজয়। আর বন্ধুকে দেওয়া কথা তিনি রাখতে পারছেন না। সেটা ভেবেই হয়তো ডুকরে কেঁদে উঠেন।

তবে অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়ালে ১১২ মিনিটে লাউতারো মার্তিনেজ যখন গোল করলেন, তখনই আবার বেঞ্চে বসা থেকে উঠে আসেন টাচলাইনের কাছে। উল্লাসে ফেটে পড়েন তিনি। তারপর শেষ বাঁশি বাজার পরও তার আনন্দ ছিল বাধ ভাঙা। কারণ তাকে ছাড়াই তার সতীর্থরা এনে দিয়েছে তাকে কোপার শিরোপা।

 

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত