সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

যাতায়াতে দুর্ঘটনার হার সবচেয়ে কম বিমানে

আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৫ পিএম

বিশ্বব্যাপী সড়কপথে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে এবং এর কারণে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়। দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সড়কপথের পর রেলপথের অবস্থান। তবে সেক্ষেত্রে ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল হচ্ছে আকাশপথ। যদিও আকাশপথে দুর্ঘটনা ঘটে তবে তা বাকি দুটির চেয়ে অনেক কম। 

সড়ক দুর্ঘটনা
বিশ্বব্যাপী সড়কপথে দুর্ঘটনায় প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুবরণ করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর সড়কপথে প্রায় ১৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষ মারা যায়। আর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়া মানুষের সংখ্যা আরও অনেক বেশি, যা বছরে কোটি কোটি।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে অতিরিক্ত গতি, মদ্যপান, ড্রাইভিংয়ের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার, খারাপ রাস্তা, নিরাপদ ট্রাফিক আইন না মানা এবং নিরাপত্তা নির্দেশিকা না অনুসরণ করা। তবে বিশ্বব্যাপী পরিসংখ্যান অনুযায়ী নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনার হার বেশি। 

রেলপথে দুর্ঘটনা
সড়ক দুর্ঘটনার তুলনায় রেলপথে দুর্ঘটনা কিছুটা কম। তবে রেলপথে দুর্ঘটনার ফলাফল অনেক সময় মারাত্মক হতে পারে। রেলপথের দুর্ঘটনা বছরে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়, তবে পরিসংখ্যান দেশভেদে ভিন্ন হতে পারে। ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা কঠিন, কারণ বিভিন্ন দেশের মধ্যে দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান প্রকাশের পদ্ধতি আলাদা। তবে বিশ্বব্যাপী, প্রতি বছর কয়েক হাজার ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা হাজারের বেশি হতে পারে।

ট্রেন দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ট্র্যাকের ত্রুটি, সংকেত ব্যবস্থার সমস্যা, দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ না করা এবং অপ্রতুল রক্ষণাবেক্ষণ, এবং ড্রাইভারের অসাবধানতা অন্তর্ভুক্ত। 

আকাশপথে দুর্ঘটনা
বিশ্বব্যাপী আকাশপথে দুর্ঘটনা সড়ক বা রেলপথের তুলনায় অনেক কম হয়। ২০২৩ সালে এভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্কের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী ১ হাজার ৭৯ জন মানুষ আকাশপথে দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। তবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নতির কারণে আকাশপথের দুর্ঘটনার হার ক্রমাগত কমছে। পৃথিবীজুড়ে বিমান দুর্ঘটনার হারও অনেক কমে গেছে। আকাশপথে দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ড্রাইভিং ত্রুটি, যান্ত্রিক ত্রুটি, আবহাওয়ার অবস্থা এবং বাজে রক্ষণাবেক্ষণ।

সবকিছু বিবেচনায় নিলে সড়কপথ এখনও পৃথিবীজুড়ে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির কারণ, যেখানে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। রেলপথ তুলনামূলকভাবে কম দুর্ঘটনাযুক্ত হলেও কিছু দেশে রেল দুর্ঘটনা গুরুতর হয়, বিশেষ করে যেখানে পুরনো অবকাঠামো রয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতির কারণে রেল দুর্ঘটনা কমেছে, তবে কিছু উন্নয়নশীল দেশে এ ধরনের দুর্ঘটনা এখনও বেশি ঘটছে।

তবে আকাশপথ সব থেকে নিরাপদ পরিবহন মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। যদিও দুর্ঘটনা ঘটে, তবে তা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এ দুর্ঘটনাগুলো কমানোর জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, প্রযুক্তি ও নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আজ রবিবার দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। জেজু এয়ারের একটি বিমান ১৮১ আরোহী নিয়ে সেখানে বিধ্বস্ত হয়, যার মধ্যে ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি দুজনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জানা যায়, বিমানটি স্থানীয় সকাল ৯টার একটু পর ল্যান্ডিং গিয়ার ছাড়া ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করে। এরপর এটি রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে পাশের নিরাপত্তা বেষ্টনিতে আঘাত হানে। এর সঙ্গে সঙ্গে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সমর্থ হন।

মুয়ান ফায়ার বিভাগের প্রধান লি জিয়ং-হুন জানিয়েছেন, তাদের ধারণা পাখির আঘাতে অথবা খারাপ আবহাওয়ার কারণে হয়তো বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে পাখির আঘাত অথবা খারাপ আবহাওয়াকে ধারণা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত