সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের ডিও লেটারে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (চমেক) কতজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগ, পদায়ন, বদলি করা হয়েছে সেটির অনুসন্ধান শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। গত ৩০ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে হাছান মাহমুদ ও তার পাঁচ ভাই এবং একান্ত সহকারীসহ দশজনের তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়ার পর ওই বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে চমেক কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। জানতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা কমলেশ মন্ডল চিঠি প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তথ্য চেয়ে চমেক কর্তৃপক্ষের কাছে গত ৩০ ডিসেম্বর চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চমেকের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের ডিও লেটারে অত্র সংস্থায় কারও চাকরি হয়েছে কিনা সে বিষয়ে আমরা অনুসন্ধান শুরু করেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। তথ্য পেলে দুদককে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
অভিযোগ, নিজ দপ্তরের বাইরে স্বাস্থ্য বিভাগেও ছিল সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের দাপট। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়োগ, বদলি, পদায়ন থেকে শুরু করে সব কিছুতেই ছিল হাছান মাহমুদের আধিপত্য। শুধু তিনি নন, তার পাঁচ ভাই ও একান্ত সহকারীর দাপট ছিল স্বাস্থ্য খাতে।
জানা গেছে, সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সাত সদস্যের সুপারিশে চমেক ও হাসপাতালে ২০১০ সাল থেকে ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত কতজনের নিয়োগ, বদলি কিংবা পদায়ন হয়েছে সে বিষয়ে তথ্য চেয়ে চমেক কর্তৃপক্ষের কাছে গত ৩০ ডিসেম্বর চিঠি দেয় দুদক। একই চিঠিতে দুদক আরও ৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিষয়েও তথ্য চেয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে দুদকের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে।
তথ্য চাওয়া ব্যক্তিরা হলেন— সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, তার স্ত্রী নুরান ফাতেমা, মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদ, ভাই এরশাদ মাহমুদ, খালেদ মাহমুদ, মোরশেদ মাহমুদ, রাসেল মাহমুদ, তার একান্ত সহকারী ইমরুল করিম রাশেদ, কায়ছার, গিয়াস উদ্দিন স্বপন।
যে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের তথ্য চাওয়া হয়েছে সেগুলো হলো— দি বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিস লিমিটেড, একাডেমি অফ মেরিন এডুকেশন এন্ড টেকনোলজি লিমিটেড, বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিস জে.এ.এস লিমিটেড, মেসার্স বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট এন্ড হোল্ডিংস, অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ সোলার পাওয়ার লিমিটেড এবং সুখি বাংলা ফাউন্ডেশন।