ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে হলিউড তারকা ব্র্যাড পিটের সঙ্গে পরিচয় হয় ফরাসী নারী অ্যানের। তাদের দুজনের কথাবার্তার পর্যায়ে একসময় তারা ভালো ‘বন্ধু’ হয়ে ওঠেন।
অ্যানের একজন কোটিপতির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কিন্তু তার বৈবাহিক জীবনে সমস্যা দেখা দেয়। কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তার মধ্যেই ব্র্যাড পিটের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রেমের কবিতা এবং প্রেমের বার্তা পেতে শুরু করেছিলেন অ্যান। তিনি এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন যে তিনি ব্র্যাড পিটের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন।
অ্যান বলেন, ‘আমি লোকটিকে পছন্দ করতাম এবং তিনি জানতেন নারীদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয়।’
একটা সময়ে ভুয়া হাসপাতালের ছবি দেখিয়ে সেই নারীর কাছে চিকিৎসার জন্য টাকা চান ব্র্যাড পিট। সেসময় ব্র্যাড পিটের অ্যাকাউন্টটি থেকে দাবি করা হয় যে, অ্যাঞ্জেলিনা জোলির সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের মামলার কারণে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছে। ফলে তিনি নিজের চিকিৎসার খরচ চালাতে পারছেন না।
এমন কথা শোনার পর সেই নারী তাকে ৮ লাখ ইউরো পাঠান, যা বাংলাদেশি টাকায় ৯ কোটি ৯৬ লাখ ৭২ হাজারেরও বেশি অর্থাৎ প্রায় ১০ কোটি টাকা।
কিন্তু পরে তিনি বুঝতে পারেন ব্র্যাড পিট নামে যে অ্যাকাউন্টটির সঙ্গে কথা বলছিলেন সেটি ফেইক অর্থাৎ ভুয়া। তিনি ফাঁদে পড়েছেন এবং প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ৫৩ বছর বয়সী অ্যানের সঙ্গে। গত রবিবার সন্ধ্যায় ফ্রান্সের টিএফওয়ান নিউজ চ্যানেলের এক শোয়ে এই ঘটনাটি প্রকাশ করা হয়। সেখানে অ্যান বলেন যে, তিনি এই বার্তাটি পেয়েছিলেন যখন তিনি টিগনেসে স্কি করতে গিয়েছিলেন। ব্র্যাড পিটের মা জেন ইটা পিটের নামে একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে মেসেজটি আসে।
একদিন পরে, অন্য একটি অ্যাকাউন্ট নিজেকে অভিনেতা ব্র্যাড পিট হিসাবে পরিচয় দেয় এবং অ্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এই নকল ব্র্যাড পিট সর্বদা অ্যানের কল এড়িয়ে চলত। বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি তার ভিডিও এবং ছবি পাঠাতেই বেশি উৎসাহী ছিল সে। অ্যানকে বিয়ের প্রস্তাবও দেয় এই ব্যক্তি। অ্যানকে দামি উপহার পাঠানোর কথা বলেন এবং আরও ৯০০০ ইউরো চেয়ে নেয়। যদিও অ্যান কিছুই পাননি।
অ্যানের বিবাহবিচ্ছেদ চূড়ান্ত হওয়ার পরে, তিনি ৭ লক্ষ ৭৫ হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণ পান। ব্র্যাড পিটের ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করে অ্যানের থেকে টাকা আদায়ের ঘটনাটি শুরু হয় তার পরেই।
২০২৪ সালে, অ্যান এই সত্যটি জানতে পারেন যখন তিনি ব্র্যাড পিট এবং গয়না ডিজাইনার ইনেস ডি রেমনের মধ্যে সম্পর্কের খবর পান। এই ঘটনার পর অ্যান মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তিনি জানতে পারেন, তিনি এত দিন ধরে প্রতারিত হচ্ছিলেন।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান