শিশুর মানসিক বিকাশ সঠিকভাবে হওয়ার জন্য তাকে ভালোবাসা, যত্ন এবং সঠিক পরিবেশ দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেক সময় না জেনে বা বুঝে আমরা এমন কিছু আচরণ করি, যা শিশুর মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। সেই জন্যে বাচ্চারা হয়তো ছোট বয়সে সে তার চাহিদার কথা প্রকাশ করতে পারে না। তবে সে প্রকাশ করে কিন্তু সেদিকে আমরা মনোযোগ দেই না । সে যখন বড় হয় তখন কিন্তু সে তার কথা গুলো মৌখিক ভাবে প্রকাশ করতে পারে। আর খাবারের বিষয়টা বাচ্চা চাই তার ওপর ছেড়ে দিতে, বলা হয় ডিমান্ড ফিটিং বাচ্চার যখন ক্ষুধা লাগবে যখন তার চাহিদার প্রয়োজন হবে সে তখন নিজের খাবার চাইবে। আমাদের দায়িত্ব হবে খাবার তৈরি করে দেওয়া। নিচে কিছু সাধারণ ভুল এবং এর প্রভাব আলোচনা করা হলো:
১. শিশুকে বারবার শাসন করলে বা বকাঝকা করলে সে ভয় পায় এবং নিজের ভাবনাগুলো প্রকাশ করতে পারে না। যার ফলে তার আত্মবিশ্বাস কমে যেতে পারে।
২. শিশুকে অন্য শিশুদের সঙ্গে তুলনা করা তার আত্মসম্মানবোধে আঘাত হানতে পারে। এটি তার মধ্যে হীনমন্যতা সৃষ্টি করে।
৩. শিশুর চিন্তা, কথা বা অনুভূতিকে অবহেলা করলে সে নিজেকে অবমূল্যায়িত মনে করতে পারে, যা তার মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।
৪.পড়াশোনা বা অন্য কোনো কাজে অতিরিক্ত চাপ দিলে শিশুর মানসিক চাপ বেড়ে যায়। এটি তার সৃজনশীলতাকে দমন করতে পারে।
৫. ডিজিটাল ডিভাইসে বেশি সময় দেওয়া এবং শিশুকে বেশি সময় মোবাইল, ট্যাব বা টিভির সামনে বসিয়ে রাখলে তার সামাজিক দক্ষতা এবং চিন্তার স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হয়।
৬. নেতিবাচক পরিবেশে রাখা ও শিশু যদি ঘরে বারবার ঝগড়া, রাগ বা অশান্তি দেখে, তবে সেটি তার মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
করণীয়:
শিশুর প্রতি ধৈর্য ধরুন এবং তাকে ভালোবাসুন। তার প্রশ্নের উত্তর দিন এবং মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করুন। প্রশংসা এবং উৎসাহ দিয়ে তার আত্মবিশ্বাস বাড়ান এবং তাকে একটি নিরাপদ ও বন্ধুসুলভ পরিবেশে রাখুন। সৃজনশীল কাজে জড়িত হতে উৎসাহিত করুন।তার সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান এবং খোলামেলা আলোচনা করুন। শিশুর মানসিক বিকাশে ছোট ছোট পদক্ষেপই বড় পরিবর্তন আনতে পারে। মনে রাখবেন, একজন সুস্থ মানসিকতার মানুষ তৈরি করতে এখনই যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।