পুলিশের সাবেক ও বর্তমান দুই পরিদর্শককে প্রধান আসামি করে ৫৯ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার আদালতে পৃথক মামলা করা হয়েছে। যার মধ্যে একটি মামলার বাদী দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের কক্সবাজারের প্রতিনিধি মনছুর আলম মুন্না। মঙ্গলবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কক্সবাজারে এই মামলাটি দায়ের হয়। মামলার প্রধান আসামি চকরিয়া থানার ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়াসহ ৮ জন। অপর তিনজন হলেন, একই থানার এসআই যথাক্রমে ফরহাদ রাব্বি ইশান, সোহরাব সাকিব, এএসআই পারভেজ ও একই থানার চার কনস্টেবল।
বাদী উল্লেখ করেছেন, ওসি মনজুর চকরিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে জনসাধারণকে জিম্মি করে টাকা আদায় ও হয়রানির অভিযোগ উঠে। এসব ব্যাপারে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে তাকে অপহরণ ও হত্যার হুমকি দেন।
মনছুর বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি গভীর রাতে চকরিয়া থানার ওসির নির্দেশে চকরিয়া থেকে কক্সবাজার এসে পত্রিকা অফিস থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় এসআই ফরহাদ রাব্বি ঈশান, সোহরাব সাকিব ও এএসআই পারভেজসহ ৪ জন কনস্টেবল। এ সময় অফিসের ২টি ল্যাপটপ, ৪টি পেনড্রাইভ ও অন্য সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায় তারা। পরে তাকে থানায় নিয়েঅমানসিক নির্যাতন করেন আসামিরা। এভাবে একদিন আটকে রেখে মিথ্যা মামলা দিয়ে চালান দেন ওসি মনজুর। প্রায় ২১ দিন পর জামিনে মুক্তি পান মুন্না।
বাদীর নিয়োজিত আইনজীবী সালাহ উদ্দীন আহমদ বলেন, সাজানো এ মামলায় ওসি নিজেই বাদী ও নিজেই রেকর্ডকারী কমকর্তা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আঞ্চলিক এখতিয়ার বহির্ভূত এলাকায় গিয়ে একজন সাংবাদিককে ধরে এনে নির্যাতন করা আইনের পরিপন্থী ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওসমান গনি বলেন, বিচারক আকতার জাবেদ মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ বলেন, মামলার বিষয়ে আমি অবগত নই। কেউ অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, মামলার বিষয়টি জেনেছি। তদন্তে যা হয়।
একই আদালতে অপর মামলাটির বাদী ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের অলিয়াবাদ এলাকার মৃত মোহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে আকতার হোছাইন।
২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাঈদির মুক্তিকে কেন্দ্র করে ঈদগাঁও স্টেশনের পাশে বাদীর ভাই আবদুর রশিদের মৃত্যুর ঘটনায় এ মামলা করা হয়। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে ওই সময়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মনজুর আলমকে (ডিবি)। মামলার দ্বিতীয় আসামি বর্তমান চকরিয়া থানার ওসি এবং ওই সময় ঈদগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মনজুর কাদের ভূঁইয়া। মামলাটিতে পুলিশসহ ৫১ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ ছাড়া অন্য আসামিরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আমির হোছেন জানিয়েছেন, পুলিশসহ আওয়ামী লীগের লোকজন গুলি করে রশিদকে হত্যা করে। মামলাটি আমলে নিয়ে ডিবিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নিদের্শ দেওয়া হয়েছে।