শেষ ওভারে জয়ের জন্য চিটাগংয়ের প্রয়োজন ছিল ১৫ রান, শেষ তিন বলে ৮। ১৯তম ওভার শেষে আলিসের বদলি নামা শরিফুল ইসলাম চার মারেন ওই বলে। সমীকরণ দাঁড়ায় ২ বলে ৪ রানের। এ অবস্থায় শরিফুলকে জেসন হোল্ডারের তালুবন্দি করেন খুলনা পেসার মুশফিক হাসান। আবার প্যাড পরে ক্রিজে নামেন আলিস আল ইসলাম। প্রয়োজন একটি বাউন্ডারির। মিরপুরজুড়ে পিনপতন নীরবতা। মুশফিকের করা শেষ ডেলিভারিটি কাভারের ওপর দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দেন আলিস। অন্য প্রান্তে থাকা আরাফাত সানি জয়ের খুশিতে উদ্বেল। এভাবেই বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে উত্তেজনার পারদ চূড়ায় তুলে শেষ বলে জয় ছিনিয়ে নেয় চিটাগং কিংস। তীরে এসে তরি ডোবে খুলনার। ২ উইকেটের উত্তেজনাকর জয়ে একাদশ বিপিএলের ফাইনালে ফরচুন বরিশালে পাশে নাম লেখায় চিটাগং কিংস।
শিমরন হেটমায়ার আর জেসন হোল্ডার, ক্রিকেট দুনিয়ায় পরিচিত দুটো নাম। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলে বেড়ান বিশ্বের নানান প্রান্তে। অন্যদিকে খাজা নাফে আর হোসাইন তালাত; তারা কে এবং কোন দেশের ক্রিকেটার এবং কোথায় খেলেন এই প্রশ্নের উত্তর গুগল না করে দেওয়ার মতো লোক হাতেগোনা। অথচ চিটাগং কিংসের এই অখ্যাত দুই পাকিস্তানি ক্রিকেটারের কাছেই মূলত হেরে গেছে ক্যারিবীয় শক্তিতে বলীয়ান খুলনা টাইগার্স। বিপিএল-২০২৫ এর দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চিটাগং কিংস ২ উইকেটে হারিয়েছে খুলনা টাইগার্সকে, শুক্রবারের ফাইনালে চিটাগং-এর প্রতিপক্ষ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল।
টস জিতে চিটাগং কিংস অধিনায়ক মোহাম্মদ মিথুন নিয়েছেন বোলিং। হায়দার আলির চোটে তাদের একাদশে ঢুকেছেন হোসাইন তালাত। জানুয়ারির ২২ তারিখে কিংসের হয়ে ঢাকার বিপক্ষে ম্যাচে খেলেছিলেন, করেছিলেন ২ রান আর নিয়েছিলেন ১ উইকেট। এরপর আর একাদশে জায়গা মেলেনি, সুযোগ হলো বাঁচামরার ম্যাচে। সেই সুযোগটাকেই দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন এই বামহাতি ব্যাটসম্যান। পারভেজ হোসেন ইমন আর গ্রাহাম ক্লার্ক, দুজনেই ৪ রান করে আউট হয়ে যাওয়ার পর ৩৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা চিটাগং কিংসকে ম্যাচে ফিরিয়েছে তার ২৫ বলে ৪০ রানের ইনিংস। খাজা নাফের সঙ্গে তার ৪৮ বলে ৭০ রানের ইনিংসটাই চেপে বসতে দেয়নি খুলনার বোলারদের। ৫ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় সাজানো ইনিংসে রান তোলার গতিটাকে বাড়িয়েছেন, অন্যপ্রান্তে খাজা নাফেও ছিলেন তৎপর। তাই তো ১৬৪ রানের মাঝারি লক্ষ্যটাও কঠিন হয়ে যায়নি চিটাগং-এর কাছে।
টসে হেরে আগে ব্যাটিং করে খুলনা টাইগার্স তোলে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৩ রান। মেহেদী হাসান মিরাজ ২, অ্যালেক্স রস ০, আফিফ হোসেন ৮ আর আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মোহাম্মদ নাঈম করেন ১৯ রান। খুলনার রানটা বেড়েছে শিমরন হেটমায়ারের ব্যাটে। ১৭তম ওভারে ২৩, ১৯তম ওভারে ২১ আর ২০তম ওভারে ১৭ রান তোলে খুলনা। এই রান উৎসবের ফলেই দলীয় রানটা ১৬০-এর ঘরে গেছে খুলনার। বিনুরা ফার্নান্দো নিজের করা প্রথম ৩ ওভারে ৬ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট, নিজের শেষ ওভারে দিয়েছেন ২১ রান। হেটমায়ার আউট হওয়ার আগে তার ওভারে মেরেছিলেন ২টি করে চার ও ছয়। ৩৩ বলে ৬৩ রান করা হেটমায়ারই খুলনার সর্বোচ্চ স্কোরার। বিনুরা ২ উইকেট নেন আর আলিস মাত্র ১৪ রান দিয়ে শিকার ধরেন একটি।