বন্ধু মানেই আত্মার টান, ভালবাসার বন্ধন, হৃদয়ের সংস্পর্শ, একে অন্যের ছায়া, বড় রকমের ভরসার জায়গা। সেই বন্ধুত্বের টানে তাইওয়ানের তরুণ লুইস সিংজন ইয়ের ছুটে এসেছেন দিনাজপুরের পার্বতীপুরে। গতকাল বুধবার দুপুরে পার্বতীপুর শহরের নতুন বাজার মেইনে রোডে বাইসাইকেল চালাতে দেখা যায় তাইওয়ান বিদেশি নাগরিক লুইস সিংজন ইয়ের।
২২ বছর বয়সী লুইস সিংজন ইয়ে গত ১৩ জানুয়ারি তাইওয়ান থেকে বাংলাদেশে আসেন। এরপর তিনি পার্বতীপুর শহরের আদর্শ কলেজপাড়ায় ফেসবুকের বন্ধু আপন ইসলামের (১৯) বাড়িতে যান। আপন স্থানীয় ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের ছেলে। ভিনদেশি তরুণকে দেখতে প্রায়ই আশপাশের লোকজন আসছেন।
জানা গেছে, তাইওয়ান লুইস সিংজন ইয়ে একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। লুইস ওই দেশের একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। এর আগেও টুরিস্ট ভিসায় লুইস ৪ বার বাংলাদেশ এসেছেন। আগামীতে এলে তিনি সিলেটে ঘুরতে যাবেন। ঘুরতে তার পছন্দ। তার বাবা তাইওয়ানের খি লং শহরের বাসিন্দা ইয়ে লং হুয়। দুই বোন এক ভাই লুইস সবার ছোট। দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে আপন ইসলাম জানান, এবার সে এসএসসি পরীক্ষার্থী। লেখাপড়ার পাশাপাশি একজন ফুটবল খেলোয়াড়। দেড় বছর আগে ফেসবুকের ফুটবল খেলার একটি ভিডিও আপলোড করে সে। সেখানে একটি কমেন্ট থেকে তাদের পরিচয় হয়। এরপর বন্ধুত্বে গিয়ে গড়ায়।
আপন জানায়, ‘গত এক মাস আগে হঠাৎ লুইস বাংলাদেশে আসার ইচ্ছা পোষণ করে। তখন আমি তাকে বাংলাদেশে আসার সাদর আমন্ত্রণ জানাই। গত ১৩ জানুয়ারি ৩ হাজার ১০৮ কিলোমিটার আকাশ পথ পাড়ি হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সকালে আসেন। পরে সড়কপথে রংপুর হয়ে পার্বতীপুরে আসেন। লুইস আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরে যাবেন।’
আপন জানায়, ‘লুইসের প্রিয় খাবার বলে কিছু নেই। আমরা যা খাচ্ছি সেও তা খাচ্ছে। এতে তার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। রুটি, মাছ, গরুর মাংস, সাদা ভাত, শাক, সবজি মোট কথা সে সব খাচ্ছে। তার মাতৃভাষা চাইনিজ, ইংরেজি, ভাঙা ভাঙা বাংলা বলতে পারে।’
বাংলাদেশ কেমন লাগছে জানতে চাইলে তাইওয়ান বিদেশি নাগরিক লুইস সিংজন ইয়ের বলেন, ‘অসাধারণ খুব সুন্দর। এখানে আমার খুব ভাল লাগছে। বাংলাদেশে আমি বন্ধু, বাবা ও মা পেয়েছি। এখানকার সবাই ভাল।’
আপনের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছেলের সাথে দেখা করতে আসা লুইস একজন ভ্রমণ প্রিয় মানুষ। তার আগমনে খুশির স্থানীয়রাও। ছেলের বন্ধু লুইসকে নিজের সন্তানের মতো পরম মমতায় বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন তার পরিবার।
আপনের মা মিনু বেগম জানান, ‘লুইস আমারও সন্তানের মত। লুইস সকালে রুটি, রং চা, নুডুলস, দুপুরে সাদা ভাত, মাছ ও মাংস তার পছন্দ।’