ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে মেক্সিকোর বাইরে নিসান গাড়ির উৎপাদন সরিয়ে নিতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন নিসানের সিইও মাকোতো উচিদা।
উচিদা বলেন, এই অর্থবছরে আমরা মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গাড়ি রপ্তানি করছি। মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ৩ লাখ ২০ হাজার গাড়ি রপ্তানি করা হয়েছে। যদি উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করা হয় তবে আমাদের এই পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সম্ভবত আমরা এই মডেলগুলোর উৎপাদন অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবতে পারি। যদি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাহলে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তা বাস্তবে রূপ দিতে কাজ করব।"— বলেছেন, রয়টার্সের অনুবাদ অনুসারে।
স্প্যানিশ ভাষার সংবাদমাধ্যম ইউএনওটিভি জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত মেক্সিকোর অটোমোবাইল শিল্পের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে। নিসান গত বছর মেক্সিকোতে প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার গাড়ি উৎপাদন করেছে যার মধ্যে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ইউনিটের বেশি রপ্তানি করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, উৎপাদন ও রপ্তানির দিক থেকে মেক্সিকোতে জেনারেল মোটরসের পর নিসান দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
উচিদা বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ গাড়ি রপ্তানি করছি, তাই উচ্চ শুল্ক আমাদের ব্যবসার উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য আমাদের অবশ্যই পরিস্থিতি সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সাথে আলোচনার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মেক্সিকোর উপর ২৫% শুল্ক অন্তত মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছেন যে, দক্ষিণ সীমান্তে শুল্ক আরোপের মূল উদ্দেশ্য সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে উল্লেখ করেছেন, আমাদের মধ্যে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে, যেখানে তিনি রাজি হয়েছেন যে, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী সীমান্তে ১০ হাজার মেক্সিকান সেনা মোতায়েন করা হবে। এই সেনারা বিশেষভাবে ফেন্টানাইল পাচার ও অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করার দায়িত্বে থাকবে। তবে সমালোচকরা বলছেন, মেক্সিকো এর আগেও একাধিকবার সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে।
ট্রাম্পের শুল্ক নীতি পুনরায় কার্যকর হলে, নিসানের মতো জনপ্রিয় মার্কিন কোম্পানিগুলো উৎপাদন ব্যয় কমাতে মেক্সিকো, চীন বা কানাডার বাইরে কারখানা স্থানান্তরের কথা ভাবতে পারে।
এছাড়া, মেক্সিকোর সঙ্গে শুল্ক নীতির পাশাপাশি, হোয়াইট হাউস ঘোষণা দিয়েছে যে, যেসব দেশ মার্কিন পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়, তাদের উপরও প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করা হবে।
ট্রাম্প বৃহস্পতিবার এক স্মারকে বলেছেন, বাণিজ্যকে আরও ভারসাম্যমূলক ও ন্যায্য করার মাধ্যমে আমরা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারব, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বাড়াতে পারব এবং আমেরিকান শ্রমিক, উৎপাদনকারী, কৃষক, উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারব।