গ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছিলেন ছেলেকে বিদায় দিতে। বিশ্রামের জন্য উঠেছিলেন আবাসিক হোটেলে। আর সেখানেই অগ্নিকাণ্ডে ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মৃত্যু হলো মিরন জম্মাদারের। ষাটোর্ধ্ব মিরনের বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার দারুলহুদা বটতলা গ্রামে। আগামীকাল মঙ্গলবার তার ছেলে মুনিব জমাদ্দারের সৌদি আরব যাওয়ার ফ্লাইট। গুলশান শাহাজাদপুরে আবাসিক হোটেলে আগুনে এই ঘটনাটিতে নিহত বাকি ৩ জনের পরিচয় এখনও সনাক্ত হয়নি।
আজ সোমবার বিকেলে ৪টি মরদেহই ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের বোনের স্বামী হিরন তালুকদার বলেন, মিরন জমাদ্দারের ছেলে মুনিব জমাদ্দার আগামীকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট। এজন্য আজ (সোমবার) সকালে আমরা দুজন গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে হোটেলটির ৪০২ নম্বর রুমে উঠেছিলাম। আর মুবিন হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছাকাছি এলাকায় একটি হোটেলে উঠেছেন।
তিনি বলেন, সকালে আসার কিছুক্ষণ পর আমরা দুজন হোটেলটির পাশে একটি রেস্টুরেন্টে নাস্তা করি। এরপর তিনি আমাকে রেখেই বিশ্রাম করার জন্য দ্রুত হোটেলে ফিরে যান। এর অল্প সময় পরই আগুন দেখে হোটেলের নিচে দৌড়ে আসি। তখন আগুনের ধোঁয়ায় সারা হোটেল আচ্ছন্ন হয়েছিল। ঠিক সেইসময়ই মিরন আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, আমি হোটেলের ভিতরে আটকে পড়েছি। চারদিকে ধোঁয়া। কোথাও যাওয়ার জায়গা পাচ্ছি না। এই বলেই কান্নাকাটি করছিলেন। এরপরই কলটি কেটে যায়। সবশেষ ফায়ার সার্ভিস আগুন নির্বাপনের পর মিরনের মরদেহ চারতলা থেকে উদ্ধার করে।
এদিকে, গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলাশ হোসেন জানান, ৪টি মরদেহেরই সুরতহাল প্রতিবেদনে প্রস্তুত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। একটি লাশের পরিচয় সনাক্ত হলেও বাকি ৩টি মরদেহ এখনও অজ্ঞাতনামা হিসেবে রয়েছে। তাদের বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৪০ বছর।