ক্ষুদ্র মজুদদাররা পাটশিল্পকে একটি অনিশ্চয়তার মধ্যে নিয়ে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে পাট শিল্পের একটি ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তখন কাঁচাপাটের অনিয়ন্ত্রিত মূল্যের কারণে আন্তর্জাতিকভাবে আমরা ক্রেতা হারাতে শুরু করলাম। ওই সময়ে ক্ষুদ্র মজুদদারদের প্রসার ঘটেছিল।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মনিপুরীপাড়া জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারে বহুমুখী পাটপণ্য ও তাঁত বস্ত্র মেলা-২০২৫ মেলা উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে ২০ দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করে পাট অধিদপ্তর ও জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার।
এ সময় শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে পাটপণ্যের রপ্তানি বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তখন কাঁচাপাটের দাম মণপ্রতি দুই হাজার টাকা থেকে বেড়ে সাত হাজার টাকা ছাড়িয়েছিল। এ অতিমূল্যের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রেতাদের কাছে আমাদের প্রতিশ্রুত ভঙ্গ হয়েছিল। আন্তর্জাতিক ক্রেতারা আমাদের থেকে দূরে সরে যেতে শুরু করল। যার প্রভাব আমাদের শিল্প উদ্যোক্তারা গত ২-৩ বছর ধরে ভোগ করছেন। এবং এর প্রভাবে কৃষক এখনো পাটের মূল্য পাচ্ছে না।
এসব সীমাবদ্ধতার কারণে দুঃখজনকভাবে পাট রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ঘটছে না জানিয়ে তিনি বলেন, পাটে আমাদের যদি ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির সম্ভাবনা থাকে, সেটা এখন ১ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। আমরা এটা অন্তত দুই বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতে চাই। তবে এক্ষেত্রে বায়বীয় সম্ভাবনা নয়, বাস্তব সম্ভাবনা কাজ করার জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, পাটের স্থানীয় চাহিদা বৃদ্ধির জন্য বাধ্যতামূলক পাট মোড়কিকরণ আইন রয়েছে। সেখানে কিছুপণ্যের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে পাটের মোড়কীকরণের কথা বলা হয়েছে। আমরা যদি বাজারের ব্যাগ তৈরি করতে পারি তাহলে এখানে কয়েকশো কোটি টাকার বাজার তৈরি হবে। আর এটা উদ্যোক্তাদের জন্য অনেক সম্ভাবনা তৈরি করবে।
বস্ত্র ও পাট সচিব আব্দুর রউফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) জিন্নাত আরা, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু আহমেদ সিদ্দিকী, রেশম বোর্ড পরিচালক এমএ মান্নান, প্রাক্তন অতিরিক্ত সচিব বিমল চন্দ্র রায়, জুট স্পিনার অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক তাপস প্রামাণিক, বাংলাদেশ জুট মিল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ফরহাদ আহমেদ আকন্দ প্রমুখ।
