মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

৪ বছরের কোর্সকে ৬ মাসের বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছে অভিযোগ ডিএমএফদের

আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৫, ০১:৫৩ এএম

‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার সংক্রান্ত রিটের রায়কে কেন্দ্র করে নানা ধরনের কর্মসূচি ও শাটডাউনের মাধ্যমে আদালতে ওপর এমবিবিএস চিকিৎসকরা অন্যায়ভাবে চাপ প্রয়োগ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ডিপ্লোমা চিকিৎসকরা। তাদের দাবি, আদালতকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে রায়কে নিজেদের পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে ডিপ্লোমা (ডিএমএফ) চিকিৎসক ও ডিপ্লোমা মেডিকেল (ম্যাটস) শিক্ষার্থী আয়োজিত ‘স্বাস্থ্যখাতকে অস্থিতিশীলের অপচেষ্টা, আদালত অবমাননা, বিচারবিভাগকে প্রভাবিত করার অপতৎপরতার প্রতিবাদ এবং ৪ দফা দাবি’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এমবিবিএস শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের একটা অংশ ডিপ্লোমা কোর্স নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ৪ বছরের কোর্সকে তারা ৬ মাসের কোর্স বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছে। এমনকি আগামী ১২ মার্চ (আজ) উচ্চ আদালতের রায়ের আগেই তারা নানা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। সারাবিশ্বে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সহজ করা হচ্ছে। আর আমাদের এখানে সিন্ডিকেট করা হচ্ছে।

বক্তারা জানান, বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বিডিএফের পক্ষ থেকে বিএমডিসি এক্ট-২০১০ এর বৈধতা নিয়ে ২০১৩ থেকেই হাইকোর্টে লড়ছে। আদালত এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজ দিন ধার্য করেছেন। কোর্টের চলমান মামলার রায়কে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কর্মবিরতি, কর্মসূচি, সভাসমাবেশ একদিকে দেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বিরোধী এবং ‘ফৌজদারি অবমাননার’ সমান।  অন্যদিকে তাদের এসব কর্মসূচি দেশের সাধারণ মানুষের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ ভুঁইয়া বলেন, ‘আমরা চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স ও ছয় মাসের ইন্টার্নি করে চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত আছি। ছোট পর্যায়ের সার্জারিসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছি। ১৯৮৭ সালের আইন অনুযায়ী বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন নিয়ে সেবা দিয়ে আসছি। কিন্তু ২০১০ সালে বিএমডিসির দুটি ধারার মাধ্যমে আমাদের অধিকার হনন করা হয়েছে। আমরা এর বিপক্ষে উচ্চ আদালতে রিট করেছি। রিটের রায় ১২ তারিখ দেবে। কিন্তু এমবিবিএস চিকিৎসকরা লকডাউন, শাটডাউনের ঘোষণা দিয়ে আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

এই নেতা আরও বলেন, আমাদের ৩০ হাজার ডিপ্লোমা চিকিৎসকরা বেকার রয়েছে। অথচ ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে ৫ হাজার পদ খালি রয়েছে। এতে তৃণমূল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের বঞ্চিত করে মাত্র ৩ মাস প্রশিক্ষিত এইচএসসি-ডিগ্রি পাস করা ব্যক্তিদের কমিউনিটি হাসপাতালে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন করেন বিডিএফরা। এ সময় তারা চার দফা দাবি জানান। সেগুলো হলো: ১. অনতিবিলম্বে শূন্য পদে নিয়োগ এবং কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে নতুন পদ সৃজন করা। ২. প্রতিষ্ঠান ও কোর্সের নাম পরিবর্তন করে অসংগতিপূর্ণ কোর্স কারিকুলাম সংশোধন করে ইন্টার্নশিপে লগবুক প্রণয়ন করতে হবে। ৩. বিএমডিস স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চশিক্ষার অধিকার প্রদান করতে হবে। ৪. প্রস্তাবিত এলাইড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড খসড়া আইনের নাম পরিবর্তন করে ‘মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ নামকরণসহ প্রস্তাবিত ধারায় সংশোধনীসহ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত