রাজধানীর মধ্য বাড্ডায় কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে মোহাম্মদ তানভীর (২২) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হাসানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহত তানভীর মুন্সিগঞ্জের সদর উপজেলার মুন্সিরহাট গ্রামের মো. সাহাদুল্লাহর ছেলে। পরিবারের সঙ্গে মধ্য বাড্ডা কবরস্থান রোডে থাকতেন তিনি। তানভীর ওই এলাকায় একটি দোকানের কর্মচারী ছিলেন।
নিহত তানভীরের বাবা মো. সাহাদুল্লাহ জানান, গতকাল বুধবার ইফতারের পর বাসা থেকে বের হন তানভীর। এর এক ঘণ্টা পর খবর পান, কবরস্থান রোডের শেষ মাথায় আইসিএল মাঠে তানভীর পড়ে রয়েছেন। তাকে এলোপাথাড়ি কোপানো হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে গিয়ে ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি পৌঁছানোর পর ঘাতকরা তাকে দেখে সেখান থেকে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথম স্থানীয় একটি হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রাতে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে তিনি মারা যান। তার মাথা, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৭-৮টি আঘাত করা হয়েছে। ১৭-১৮ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছিল তাকে। তবুও তাকে বাঁচানো যায়নি।
অভিযোগ করে তানভীরের বাবা আরও বলেন, একই এলাকার সিয়াম ওরফে বার্গার সিয়াম, মিঠু, স্বাধীন, শাওনসহ ১০-১২ জন মিলে তাদের উপর্যুপরি কুপিয়ে জখম করেছিল। তারা মূলত নিজেদের এলাকার সিনিয়র দাবি করত। সেই সিনিয়র দাবি নিয়ে মাঝেমধ্যেই তানভিরকে রাস্তাঘাটে পেলে মারধর করত এবং খারাপ ব্যবহার করত। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হিসেবেই গতকাল রাতে তাকে কুপিয়েছে। ঘটনার সময় তার সাথে বেতনের ১০ হাজার টাকা ও একটি ফোন ছিল। সেগুলোও ছিনিয়ে নিয়েছে তারা।
এসআই মো. হাসানুর রহমান বলেন, ‘মধ্য বাড্ডায় একটি মারামারির ঘটনায় ওই যুবক ধারাল অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ ঘটনায় বুধবার রাতেই ভুক্তভোগীর বাবা একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের মধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
তানভীরের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ পাঠানো হয়েছে। কি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ড সেটি জানার চেষ্টা চলছে এবং বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।