শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

রাজধানীতে বিভিন্ন পেশার আড়ালে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে কিশোর গ্যাং

আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:৩৩ পিএম

রাজধানীর বেশকিছু এলাকা থেকে ২৭ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র‌্যাব। মাদক বাণিজ্য, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ রয়েছে ১৮ থেকে ৩৬ বছর বয়সী এসব তরুণের বিরুদ্ধে। তাদের ১২ জনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় চুরি, অপহরণ পূর্বক মুক্তিপণ আদায়, চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।

র‌্যাব বলছে, গ্রেপ্তারকৃতরা কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যরা পেশায় গাড়ির হেলপার ও ড্রাইভার, গ্যারেজ মিস্ত্রি, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, পুরাতন মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা। তবে মূল পেশার আড়ালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত ছিল তারা।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর টিকাটুলিস্থ র‍্যাব-৩ এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুর, সবুজবাগ, শ্যামপুর ও বংশাল থানাধীন এলাকা হতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

তাদের মধ্যে রাব্বি গ্রুপের ৫ জন, হৃদয় গ্রুপের ৭, মুন্না গ্রুপের ৩, হাসান গ্রুপের ২, এবং রকি গ্রুপের ১০ জন রয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় বিভিন্ন অস্ত্র, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকাসহ অন্যান আলামত জব্দ করা হয়।

র‌্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিটি কিশোরগ্যাং গ্রপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য থাকে। ‘রাব্বি গ্রুপ’টি সন্ত্রাসী মো. রাব্বির নেতৃত্বে দীর্ঘদিন যাবত পরিচালিত হয়ে আসছে। নিজেদের মধ্যে আন্তকোন্দলের কারণে তারা প্রায় ৩টি গ্রুপে বিভক্ত হয়। 

‘হৃদয় গ্রুপ’টি গ্রেপ্তার হৃদয়ের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হচ্ছে। তারা রাজধানীর বংশাল ও আশাপাশ এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো। এই গ্রুপের সন্ত্রাসীরা একাকী পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নিতো।  তারা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গুলিস্থান, বংশাল, চকবাজার এলাকাসহ আশপাশ এলাকায় দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারামারিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো। এছাড়াও মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত। 

র‌্যাব জানায়, শাহজাহানপুর ও সবুজবাগ এলাকায় মুন্না এবং হাসান গ্রুপ দুইটি দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী মো. মুন্না এবং হাসানের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়ে আসছে। তারা রাজধানীর শাহাজাহানপুর, সবুজবাগ, খিলগাঁওয়ের আশেপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ইভটিজিং, মারামারিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো। এই গ্রুপের সদস্যরা সাইলেন্সারবিহীন মোটরসাইকেলের মাধ্যমে বিকট শব্দ করে খিলগাঁও ফ্লাইওভার এলাকায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে অপরবাধ মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রকি গ্রুপটি রাজধানীর শ্যামপুর কদমতলী, যাত্রাবাড়িসহ আশপাশের এলাকায় গ্রেপ্তার রকির নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তারা এসব এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, ছিনতাই এবং বিভিন্ন মানুষকে হুমকি, মারধরসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম করে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল বিভিন্ন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করা। এছাড়াও তারা রকির নেতৃত্বে বিভিন্ন ওইসব এলাকায় টাকার বিনিময়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতো।

র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মো. রাব্বি (২০), মো. হৃদয় (২০), মো. মুন্না (২০), মো. হাসান (২০), আব্দুর রশিদ এসহাক ওরফে রকি (২৬), মো. শুভ (২০), মো. সিফাত (১৮), মো. রাকিব (১৮), মো. তন্ময় হোসেন (১৮), মো. মিলন (১৯), মো. রাজন (১৯), মো. ইয়াছিন (১৯), মো. ইমন (১৮), আবু তাওহীদ সাফির (২০), মো. সিয়াম (১৯), মো. রাকিবুল ইসলাম (২০), মো. জাকির হোসেন (৩০), মো. রাকিব (২৩), মো. নাফিস হোসেন ওরফে মুন্না (২৪), মো. শুভ (২২), মো. রবিউল শেখ (২৪), মো. মোশারফ (২৫), মো. সোহেল (২৭), মো. শুভ (২৭), মো. বাবুল খান (৩৬), মো. নজরুল হক (৩২), মো. বাবুল হোসেন (৩৬)।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত