মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

ব্যাংকের পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে নগদ লভ্যাংশ নয়

আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:৫২ এএম

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর শেয়ারের বিপরীতে লভ্যাংশ ঘোষণার ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শুধু বিবেচ্য পঞ্জিকাবর্ষের মুনাফা থেকে নগদ লভ্যাংশ দেওয়া যাবে। আগের পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে কোনো নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করা যাবে না।

গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটায় সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতে সৃষ্ট চাপ মোকাবিলা করে ব্যাংকগুলো যাতে দেশের অর্থনীতিতে যথার্থ অবদান রাখতে পারে, সে উদ্দেশ্যে ব্যাংকগুলোর মুনাফা যথাসম্ভব অবণ্টিত রেখে মূলধন কাঠামো অধিকতর শক্তিশালী ও সুসংহত করার মাধ্যমে পর্যাপ্ত তারল্য বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। যে কারণে ২০২১ সালে ৭ ফেব্রুয়ারি ও ২০২১ সালের ১৬ মার্চ দুটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর শেয়ারের বিপরীতে লভ্যাংশ ঘোষণার নীতিমালা জারি করা হয়, যা এখনো কার্যকর রয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশের ব্যাংক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি, আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা, ব্যাংকগুলোর আর্থিক সক্ষমতা এবং ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের রিটার্নের বিষয়টি সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করে ব্যাংকের শেয়ারের বিপরীতে লভ্যাংশ বিতরণের ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালা অনুসরণের নির্দেশ দেওয়া হলো। নির্দেশনাগুলো হলো শুধু বিবেচ্য পঞ্জিকাবর্ষের মুনাফা হতে নগদ লভ্যাংশ প্রদান করা যাবে; আগের পুঞ্জীভূত মুনাফা হতে কোনো নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করা যাবে না। সিআরআর ও এসএলআর ঘাটতিজনিত আরোপিত দ-সুদ ও জরিমানা অনাদায়ী থাকা যাবে না। ব্যাংকের শ্রেণীকৃত ঋণ ও বিনিয়োগের হার মোট ঋণ ও বিনিয়োগের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশের বেশি হবে না।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে ঋণ, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সম্পদের বিপরীতে কোনো প্রকার সংস্থান ঘাটতি থাকা যাবে না। প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে কোনো প্রকার ডেফারেল সুবিধা গ্রহণ করা হলে তা বহাল থাকা অবস্থায় কোনো প্রকার লভ্যাংশ ঘোষণা করা যাবে না।

সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, পঞ্জিকাবর্ষের মুনাফা হতে নগদ লভ্যাংশ প্রদানকারী ব্যাংকগুলোর ঘোষিত লভ্যাংশের পরিমাণ কোনোক্রমেই পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশের বেশি হবে না। যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর পর ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ২ দশমিক ৫ শতাংশ ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১৫ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে, সেসব ব্যাংক তাদের সামর্থ্য অনুসারে নগদ ও স্টক লভ্যাংশ বিতরণ করতে পারবে।

এ ছাড়া যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর পর ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ২ দশমিক ৫ শতাংশ ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১২ দশমিক ৫ শতাংশের কিন্তু ১৫ শতাংশের কম মূলধন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে, সেসব ব্যাংক তাদের সামর্থ্য অনুসারে নগদ ও স্টক লভ্যাংশ বিতরণ করতে পারবে। প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর পর যেসব ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে সংরক্ষিত মূলধনের হার ১২ দশমিক ৫ শতাংশের কম তবে ন্যূনতম রক্ষিতব্য মূলধনের বেশি হবে সেসব ব্যাংক, তাদের সামর্থ্য অনুসারে কেবলমাত্র স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে।

এ নীতিমালা অনুসারে লভ্যাংশ প্রদানকারী ব্যাংকগুলোকে লভ্যাংশ ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে নির্দিষ্ট ছকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা সিইওর স্বাক্ষরে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশনে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এ নীতিমালা ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে সমাপ্ত বছরের লভ্যাংশ ঘোষণার ক্ষেত্র হতে ব্যাংকসমূহের জন্য প্রযোজ্য হবে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত