ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) জমজমাট লড়াইয়ে এনামুল হক বিজয়ের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও তোফায়েল আহমেদের তাণ্ডবে শক্তিশালী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে ৬৫ রানে হারিয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে উঠে এসেছে দলটি।
বিকেএসপির মাঠে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। শুরু থেকেই দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও সাদিকুর রহমান। পাওয়ার প্লেতেই বিনা উইকেটে ৬৮ রান তুলে দলকে ভালো শুরু এনে দেন তারা।
বিজয় আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৫৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুললেও, সাদিকুর খানিকটা ধীরগতিতে ৬৫ বলে পঞ্চাশ ছোন। তবে হাফ সেঞ্চুরির পর বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি। ৭৫ বলে ৬০ রান করে তাসকিন আহমেদের বলে ফিরলে ভাঙে ১৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি।
এরপর কিছুটা ব্যাটিং ধস নামে। শোভন মোড়ল সুবিধা করতে পারেননি, শামসুর রহমান শুভও ৩২ রান করে ফিরেছেন। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন অধিনায়ক বিজয়। ১২২ বলে শতক স্পর্শ করেন তিনি।
সেঞ্চুরির পর আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন বিজয়। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন তোফায়েল আহমেদ। ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পথে চার-ছক্কার বন্যা বইয়ে দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২৯ বলে ৬৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে তাসকিনের বলে ক্যাচ দেন। তবে বিজয় অপরাজিত থাকেন ১৪৯ রানে।
গাজী ক্রিকেটার্স ৫০ ওভারে ৩৩৬ রান তুলে মোহামেডানকে বড় লক্ষ্য ছুড়ে দেয়। মোহামেডানের হয়ে তাসকিন আহমেদ ১০ ওভারে ১০৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন, যা ডিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড।
৩৩৭ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় ভালো সূচনা এনে দেন মোহামেডানের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও রনি তালুকদার। তবে ভাগ্য তামিমের পক্ষে ছিল। অফস্টাম্পের বাইরে শেখ পারভেজ জীবনের ডেলিভারিতে ব্যাটে-বলে করতে ব্যর্থ হলেও, কিপার বিজয় বল তালুবন্দি করতে পারেননি।
এই জীবন পেয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন তামিম। তবে ৪৮ রানে পৌঁছে আবু হাশিমের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তিনি।
এরপর রনি তালুকদার ও তাওহীদ হৃদয় কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। ৮০ রানের জুটি গড়েন তারা। কিন্তু রনি তালুকদার ৭৪ রান করে লিওন ইসলামের বলে লং অনে ক্যাচ দিলে মোহামেডানকে বড় ধাক্কা দেয় গাজী ক্রিকেটার্স। এরপরই ৫২ বলে ৩৬ রান করে হৃদয় বোল্ড হন আব্দুল গাফফারের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে।
মাঝের সারিতে আরিফুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মেহেদী হাসান মিরাজরা ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন। তবে শেষ দিকে মুশফিকুর রহিম ৪৬ বলে ৪৯ রানের ইনিংস খেলে হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু জয়ের জন্য তা যথেষ্ট ছিল না। ২৭১ রানে অল আউট হয় মোহামেডান। গাজী ক্রিকেটার্সের হয়ে পেসার আব্দুল গাফফার ৪ উইকেট ও স্পিনার হাশিম ২ উইকেট নেন।
এই জয়ে ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে এসেছে গাজী ক্রিকেটার্স। অন্যদিকে মোহামেডান লিগ টেবিলের পেছনে পড়ে গেল।