টাঙ্গাইলে পাওনা টাকা চাওয়ার জেরে এক যুবদল নেতার মিথ্যা মামলা ও ক্রমাগত হুমকিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এক প্রবাসী ও তার পরিবার। প্রতিকারে মামলা দায়ের করেও সুফল না পেয়ে সংবাদ সম্মেলনে যুবদল নেতার অত্যাচার থেকে রেহাই পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন সৌদী প্রবাসী মো. আশিকুর রহমান তালুকদার। তিনি কালিহাতী উপজেলার বাসজানা মালতি গ্রামের শাহজাহান তালুকদারের ছেলে।
টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবে বুধবার (১৯ মার্চ) সকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আশিকুর রহমান তালুকদার লিখিত বক্তব্যে জানান, তিনি দীর্ঘদিন যাবত সৌদি আরবের একটি ভিসা ব্যবসার কোম্পানিতে কাজ করছেন। ২০২৩ সালে তিনি কোম্পানির ভিসা ব্যবসা পরিচালনার দায়িত্ব পান। একপর্যায়ে তার গ্রামের আমিনুর ইসলাম রুবেল বাংলাদেশে ভিসার ব্যবসা করার আগ্রহ জানিয়ে সহযোগিতা চান। তখন কালিহাতী উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ও এলেঙ্গা পৌরসভার চিনামুড়া গ্রামের হাসমত আলী রেজা তার পার্টনার বলে জানান। পরে যুবদল নেতা হাসমত আলী রেজা তার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন। যোগাযোগের এক পর্যায়ে হাসমত রেজা ১৩টি রিকডিং লাইসেন্সের নম্বর দিয়ে ভিসা পাঠানোর অনুরোধ করেন। পরে তিনি ১৩টি লাইসেন্সের মাধ্যমে ৩ কোটি ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের ১১৯টি ভিসা পাঠান। ভিসার বিপরীতে মোট টাকার মধ্যে ৫৮ লাখ টাকা হাসমত আলী রেজা তাকে পাঠান। বাকি টাকা না দিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে কালক্ষেপন করতে থাকেন। কোম্পানির মালিক বাকি টাকার জন্য চাপ দিলে তিনিও যুবদল নেতা হাসমত আলী রেজা ও আমিনুর ইসলাম রুবেলকে চাপ দেন। কিন্তু তারা পাওনা টাকা পরিশোধ করতে গড়িমসি করেন।
তিনি জানান, কোম্পানির পাওনা টাকার চাপে তিনি বাংলাদেশে গ্রামের বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে মালিকের টাকা পরিশোধ করে ২০২৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরে আসেন। দেশে এসে আমিনুর ইসলাম রুবেল ও হাসমত আলী রেজার কাছে পাওনা টাকা চাইতে গেলে তাকে ঢাকার অফিসে যেতে বলেন। তাদের কথা মতো ঢাকার অফিসে গেলে তারা কোন টাকা দিতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এক পর্যায়ে তিনি রাগান্বিত হয়ে টাকা দাবি করলে তাদের লোকজন দিয়ে তাকে নাজেহাল করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, এর কিছুদিন পর যুবদল নেতা হাসমত আলী রেজা মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে টাঙ্গাইলের কালিহাতী আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলায় আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন পান। পরে পাওনা টাকার দাবিতে তিনিও আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি হলে হাসমত আলী ও রুবেল স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে আপস-মীমাংসার কথা বলে আদালত থেকে জামিন পান। এরপরও বাকি টাকা পরিশোধ না করে বা আপস-মীমাংসায় না বসে তাদের বাহিনী দিয়ে তাকে এলেঙ্গায় আটক করে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেয়। মামলা তুলে না নিলে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এসবের পরও মামলা তুলে না নেওয়ায় হাসমত আলী রেজা আবার তার নামে সাজানো অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।
তিনি জানান, ন্যায্য পাওনা টাকা দাবি করায় হয়রানি ও অত্যাচার-নির্যাতন এবং ক্রমাগত হুমকিতে পরিবার নিয়ে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে তিনি প্রশাসনের সুদৃষ্টি ও সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তার বাবা শাহজাহান তালুকদার, স্ত্রী রুমা খান, বোন রিনা বেগম, শিশু সন্তান তাবাসসুম তালুকদার, ভাগ্নে আবীরসহ বিভিন্ন সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।