বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম

গাজা উপত্যকায় নতুন যুদ্ধবিরতির দাবিতে ইসরায়েলের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন ইসরায়েলি নাগরিকরা। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ডানপন্থী সরকারের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেন বিক্ষোভকারীরা। নেতানিয়াহু সরকার দেশের গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে বলে দাবি করেন তারা।

ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এসময় জেরুজালেম ও তেল আবিব থেকে পুলিশ কমপক্ষে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে। বিক্ষোভকারীরা জানান, বিক্ষোভ কর্মসূচির গতি বাড়তে থাকলে আগামীতে আরও বেশি বিক্ষোভ হতে পারে।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করার জন্য নেতানিয়াহুর প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। তবে গাজায় প্রাণঘাতী বিমান হামলা চালিয়ে দুই মাসের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জোরালো হয়ে ওঠে।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ করে বলেন, সরকার রাজনৈতিক কারণে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং গাজায় এখনো হামাসের কাছে জিম্মি থাকা ৫৯ জনের পরিণতি নিয়ে ভাবছে না। জিম্মিদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করছেন তারা।

যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখতে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর আহ্বান উপেক্ষা করে সম্প্রতি আকাশ ও স্থলপথে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। এই হামলার কারণে গত জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেস্তে গেছে। 

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে গত কয়েক দিনে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় প্রায় ৬০০ মানুষ নিহত হয়েছেন।

ব্রাদার্স ইন আর্মস আন্দোলনের প্রধান নির্বাহী ইতান হার্জেল বলেন, বর্তমান সরকার নিজেদের রক্ষা করার জন্য দেশের জনসাধারণকে বিরক্ত করবে। আর এসব বিষয়গুলো থেকে নজর অন্যদিকে সরানোর জন্য আবারও যুদ্ধ শুরু করেছে। সরকার সম্ভাব্য সব পর্যায়ে সব ধরনের বৈধতা হারিয়েছে। তারা ব্যর্থ হচ্ছে।

গত বুধবার জেরুজালেমের মধ্যাঞ্চলে নেতানিয়াহুর সরকারি বাসভবনের কাছের সড়ককে হাজারো মানুষ অবস্থান নিয়েছিলেন। হাতে পতাকা ও গাজায় জিম্মি থাকা মানুষদের সমর্থনে লেখা স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এসময় অনেকে ড্রাম বাজাচ্ছিলেন এবং স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘এখনই জিম্মি মুক্তির চুক্তি করুন।

নৌবাহিনীর সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ওরা নাকাশ পেলেড বলেন, আমি মনে করি, আমরা আমাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পেরেছি। আমাদের সংগঠিত হতে হবে, আমাদের অবিচল থাকতে হবে, আমাদের মূল লক্ষ্যে নিবদ্ধ থাকতে হবে। বিক্ষোভ হওয়া যেমন ঠিক নয়, তেমনি এটিকে ভদ্রোচিতও রাখা যায় না।

তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল তুরস্ক নয়, ইসরায়েল ইরান নয়।’ নেতানিয়াহুর নেওয়া বেশ কিছু সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে ইসরায়েলি গণতন্ত্রের জন্য ‘লাল পতাকা’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এর একটি হলো, বারকে বরখাস্ত করার তৎপরতা। আরেকটি হলো, অ্যাটর্নি জেনারেল গ্যালি বাহারাভ মিয়ারাকে বরখাস্ত করার তৎপরতা। মিয়ারা যুক্তি দেখিয়েছেন, বারকে তাঁর পদ থেকে উৎখাত করা হলে তা অবৈধ হতে পারে।

এদিকে চলমান দুর্নীতির বিচার শেষে নেতানিয়াহুরও কারাদণ্ড হতে পারে। ৭৫ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১৭ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এখন সপ্তাহে দুবার করে আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত