ছায়ানটই যেন ছিল তার প্রাণ। নিজের সেই প্রাণ প্রাঙ্গণে আজ বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে নেওয়া হয় সনজীদা খাতুনের নিথর দেহ। তাকে শেষবারের মতো দেখতে সকাল থেকেই ছায়ানট ভবনে আসতে শুরু করেন সংগীতপ্রেমীসহ নানা অঙ্গনের মানুষ। এ সময় রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করা হয়। ফুলেল শ্রদ্ধায় ভরে উঠে সন্জীদা খাতুনের মরদেহ। একে একে প্রত্যেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি চলতে থাকে সংগীত পরিবেশন।
ছায়ানটের সহ-সভাপতি খায়রুল আনাম শাকিল সাংবাদিকদের বলেন, বাঙালি সংস্কৃতি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করেছেন সনজীদা খাতুন। এই সমাজে যা ঘটছে, যে অরাজকতা চলছে, তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় থাকতেন তিনি। সব সময় বলতেন, ‘আমরা যে বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছি, তা কী পারছি?’ দেশের অরাজকতা নিয়ে তিনি সব সময় দুশ্চিন্তা করতেন।
নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের সময়ে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সবচেয়ে উজ্জ্বল মানুষ ছিলেন সনজীদা খাতুন। তিনি সব সময় তাঁর আদর্শে অটুট ছিলেন। বিন্দুমাত্র আপস তিনি করেন নি।’
শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে আরও শ্রদ্ধা জানাতে আসেন ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা, শিবলি মহম্মদ, শামীম আরা নীপা, মিনু হক, চন্দনা মজুমদার, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, নায়লা আজাদ নুপুর, ম হামিদ, অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, মফিদুল হক, চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম, অদিতি মহসিন, ঝুনা চৌধুরী, প্রমুখ।
জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ, কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, কহন বাচিক, সুরের ধারা, বাংলাদেশ রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সংস্থা, বাংলা একাডেমিসহ নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’ এবং জাতীয় সংগীত সবাই মিলে গাওয়ার মাধ্যমে শেষ হয় ছায়ানটে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান।
শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে বিএসএমএমইউতে হিমঘরে রাখা হবে। তবে এর পরের কার্যক্রম নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে পরিবার।