সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

শ্রীমঙ্গলে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, যৌথবাহিনীর হাতে আটক ১৪

আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৫, ০৪:০১ পিএম

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা (টমটম) পার্কিংকে কেন্দ্রে করে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিএনপির জেলা কমিটির সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র মহসিন মিয়া মধু ও শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের সাবেক আনার মিয়া গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১৫টি টমটম, ১টি প্রাইভেট কার ভাঙচুর ও পথচারীসহ ৩৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রবিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে শহরের গদার বাজার এলাকায় এ ঘটনার সূত্রপাত হয়ে দুই পক্ষই মারমুখি অবস্থান নেয়৷ এ সময় দুইপক্ষের হয়ে লড়াই করতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের সমর্থকরা শ্রীমঙ্গল শহরে আসেন। দুইপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ফাকাগুলি ছোড়ে। এ সময় ঈদের কেনাকাটা করতে আসা লোকজন শহরের বিভিন্ন মার্কেটে আটকা পড়েন। পরে রাত ৩টার দিকে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা মহসিন মিয়া মধুসহ ১৪ জনকে আটক করে রাতেই শ্রীমঙ্গল থানায় হস্তান্তর করে যৌথবাহিনী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শহরের গদার বাজার এলাকায় সাবেক মেয়র মহসিন মধুর বিনা লাভের বাজার নামে একটি স্টল রয়েছে। সেখানের সামনে টমটম পার্কিং নিয়ে টমটম চালকদের সাথে মহসিন মিয়ার বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার আনার মিয়ার লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। পরে সেনাবাহিনী মাঠে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় শহরে বিশৃঙ্খলা হলে পুলিশ ৫৬ রাউন্ড শর্ট গানের ফাঁকাগুলি ছুড়ে দুইপক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পুলিশ ও যৌথবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলে যৌথবাহিনীর অভিযানে সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা মহসিনসহ ১৪ জনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়। এই বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রীমঙ্গল শহরের একাধিক ব্যবসায়ী দেশ রূপান্তরকে বলেন, রাত ১টা থেকেই শ্রীমঙ্গল শহর খালি হয়ে যাওয়া শুরু করে। আমরা প্রতিবছরই ঈদের আগের রাতে সারারাত দোকান খোলা রাখি। এ বছর এমনিতেই বেচাকেনা কম, তার মধ্যে মারামারির ঘটনায় আমাদের মালামাল দোকানে রয়ে গেছে। অনেকেই ঈদের কেনাকাটা করতে পারেনি। আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র এএসপি আনিসুর রহমান জানান, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মোট ১৪ জনকে তাদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন জানান, রবিবার দিবাগত রাতে শহরে টমটমচালক, গ্রামবাসী ও সাবেক মেয়রের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ যখন সংঘর্ষ থামাতে পার ছিল না তখন শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে সেনাবাহিনী তলব করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত