প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে আম্পায়ারের সঙ্গে বাজে ব্যবহারে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তাওহীদ হৃদয়। খেলতে পারেননি সুপার লিগের প্রথম ম্যাচে। বাজেভাবে হারে মোহামেডান। আপিল করে শাস্তি স্থগিত রেখে আজ খেলেছেন অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে। আর তিনি মাঠে ফেরাতে জয়ও পেয়েছে মোহামেডান।
৪২ ওভারের ম্যাচে ২৪২ রান তাড়া করে রনি তালুকদারের সেঞ্চুরিতে প্রায় ৬ ওভার ও ৭ উইকেট হাতে রেখেই ম্যাচ জিতেছে মোহামেডান। ওদিকে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে শীষস্থান ধরে রেখেছে আবাহনী। আর এনামুল হক বিজয়ের সেঞ্চুরিতে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ৭ উইকেটে হারিয়েছে লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জকে।
দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হৃদয় এক ম্যাচ পরই যেভাবে খেললেন
আম্পায়ার্স কমিটির প্রধান ও বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান মিঠু জানিয়েছেন, 'সে (হৃদয়) দুটি অপরাধ করেছে। প্রথম অপরাধ মাঠে, তার জন্য ম্যাচ রেফারির কাছ থেকে শাস্তি পেয়েছে সে। সেই শাস্তি ভোগ করেছে। পরের অপরাধ হচ্ছে গণমাধ্যমে আম্পায়ারের সমালোচনা করে। এই শাস্তি হিসেবে আরেক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা এসেছে। সেটার জন্য তারা (মোহামেডান) আবেদন করেছে। বিষয়টি যেহেতু আপিলে আছে এজন্য খেলতে পারছে।'
৪২ ওভারে নামিয়ে আনা ম্যাচে টস করে জয়ী হন তাওহীদ হৃদয় এবং প্রতিপক্ষকে ব্যাটিঙে পাঠান। অগ্রণীকে দারুণ শুরু এনে দেন দুই ওপেনার ইমরানউজ্জামান ও অমিত হাসান। ইমরানউজ্জামান ৩৮ রান করে আউট হন। অমিতের ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান। ওয়ান ডাউনে নেমে ৪১ রান করেছেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস।
এর বাইরে বলার মতো রান করেছেন কেবল মার্শাল আইয়ুব। তিনি ৪১ বলে ৩১ রান করেন। আর তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি পেয়ে যায় অগ্রণী। তবে নিয়মিত ব্যাটারদের আসা যাওয়ার কারণে তাদের সংগ্রহ বড় হয়নি। মোহামেডানের হয়ে একাই ৪ উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৩টি উইকেট নিয়েছেন ইবাদত হোসেন। আর দুটি উইকেট পান মোস্তাফিজুর রহমান।
জবাবে রনি তালুকদার ও আনিমুল ইসলাম ইমনের উদ্বোধনী জুটিতেই ৩০ ওভরে ১৯৯ রান পায় মোহামেডান। রনি ১০০ বলে ১২২ রান করার পর রিটায়ার্ট আউট হন। ইমন ৮২ বলে ৭৫ রান করে আউট হওয়ার পর দ্রুতই আউট হয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিন নম্বরে নেমে করেছেন মাত্র ৭ রান। আর ২২ বলে ২৭ রান করে ফেরেন তৌফিক খান তুষার।
সাইফউদ্দিন ৫ বলে ৫ ও তাওহীদ হৃদয় ১ বলে ২ রান করে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
এই জয়ে ১৩ ম্যাচ থেকে মোহামেডানের পয়েন্ট বেড়ে দাড়ালো ২০।
গুলশানকে এবার ৫০ রানে হারালো আবাহনী
রবিন লিগে নিজেরা ৩২৩ রান করে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবকে ১৬২ রানে হারিয়েছিল আবাহনী। সুপার লিগে ২৭৯ রান করে হারালো ৫০ রানে।
মিরপুরে আগে ব্যাট করতে নামা আবাহনীর শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে শাহরিয়ার কমল বিদায় নেন ২ রান করেই। এরপর তিনে নেমে পারভেজ হোসেন ইমনের সঙ্গে জুটি গড়েন জিসান আলম। দলীয় রান ১০০ হওয়ার আগেই জিসানকে ২৬ রানে বিদায় করেন নিহাদউজ্জামান। সঙ্গীকে হারালেও মোহাম্মদ মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে রান বাড়াতে থাকেন ইমন। তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। তবে সেঞ্চুরির আশায় থাকা ইমন ৭০ বলে ৮৩ রান করে নিহাদের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন প্যাভিলিয়নে। এরপর মোহাম্মদ মিঠুনের ৪৫ আর লোয়ার অর্ডারদের ছোটো ছোটো ইনিংসে ২৭৮ রানে পৌছাতে পারে আবাহনী। ৩৯ রানে ফরহাদে রেজা নেন ৩ উইকেট, আর নিহাদুজ্জমান ৩২ রানে নেন ২ উইকেট।
লক্ষ্য তাড়ায় আবাহনীর স্পিনারদের দাপটে ১৬২ রানেই ৯ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে গুলশান। একা নিহাদুজ্জামান ৭৩ বলে ৮২ রানের ইনিংস দিয়ে স্কোরটাকে ভদ্রস্থ করতে পেরেছেন। হারানো দলটিকে টেনে নিয়ে ২০০'র ঘরে নিয়ে যান নিহাদউজ্জামান। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ৫টি ছক্কা। পারভেজ হোসেন ইমন হন ম্যাচ সেরা।