শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

মোহামেডানের চাপে হৃদয়কে খেলাতে ডিপিএলের নিয়ম বদল

আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩২ এএম

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের চাপে পড়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের নিয়ম বদল করতে বাধ্য হয়েছে সিসিডিএম। সেই নিয়ম পরিবর্তন করে তাওহীদ হৃদয়কে খেলতে দেওয়া হয়েছে। আর এই ঘটনার জেরে পদত্যাগ করেছেন বিসিবির টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক মনি।

ঘটনার সূচনা তাওহীদ হৃদয়ের ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা ঘিরে। মোহামেডানের এই অধিনায়ক মাঠে ও ম্যাচ শেষে আচরণবিধি ভাঙায় পেয়েছিলেন মোট সাত ডিমেরিট পয়েন্ট—যার শাস্তি ছিল দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা ও ৮০ হাজার টাকা জরিমানা। সেই অনুযায়ী সুপার লিগের প্রথম দুই ম্যাচে খেলার সুযোগ পাননি হৃদয়।

তবে সুপার লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে তাকে খেলাতেই মরিয়া হয়ে ওঠে মোহামেডান। সেই চাপ গিয়ে পড়ে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম)-এর ওপর। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে, শাস্তি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত টেকনিক্যাল কমিটিকে পাশ কাটিয়ে হঠাৎ করে হাল ধরেন বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটি।

কিন্তু সেই টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক মনি স্পষ্ট জানান, তিনি কোনোভাবেই এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে জড়িত নন। বরং 'স্বার্থের সংঘাত' দেখিয়ে আগেভাগেই পদত্যাগ করেছেন তিনি।

ইংরেজি দৈনিক সানকে মনি বলেন, 'আমি ভিন্ন ভূমিকায় কাজ করছি, এজন্য মনে হয়েছে স্বার্থের সংঘাত হতে পারে। তাই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।'

তবে বিসিবি পরিচালক ও সিসিডিএম চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, “আমি শুনেছি উনি পদত্যাগ করেছেন, তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু পাইনি।”

সূত্র জানায়, মোহামেডানের চাপে সিসিডিএম নিয়ম পরিবর্তনের জন্য আম্পায়ার্স কমিটিকে সম্পৃক্ত করে। আর সেই কমিটিই হঠাৎ করে শাস্তির সূচিতে পরিবর্তন আনে। পূর্বের নিয়মে ৪–৭ ডিমেরিট পয়েন্ট মানে ছিল দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা। এখন সেটি এক ম্যাচে নামিয়ে আনা হয়েছে।

এই ‘নতুন নিয়ম’ কার্যকর করা হয় পেছন থেকে। তাওহীদ হৃদয়ের শাস্তি কমিয়ে দেওয়া হয়, তিনি খেলেন অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে। অথচ এই সিদ্ধান্তে যাদের ভূমিকা থাকার কথা ছিল, তাদের একজন এনামুল হক মনি এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। যার ফলাফল তার পদত্যাগ।

বোর্ডের অভ্যন্তরীণ একাধিক সূত্র জানায়, আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার মিঠু ও ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন শুরুতে নিয়ম বদলে রাজি ছিলেন না। কিন্তু মোহামেডানের প্রবল চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে হয় তাদের।

এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে বিসিবির স্বচ্ছতা ও নিয়মতান্ত্রিকতা। খেলোয়াড় কিংবা ক্লাবভিত্তিক প্রভাব কতটা গভীর তা যেন ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল হৃদয়ের শাস্তি বদলের এই নাটক।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত